ভূমধ্যসাগরে মারা যাওয়া ৭ বাংলাদেশির পরিচয় মিলেছে

লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে মারা যাওয়া ৭ বাংলাদেশি নাগরিকের পরিচয় জানা গেছে। যদিও মারা যাওয়া ওই বাংলাদেশিদের সঙ্গে কোনো ধরনের ডকুমেন্ট না থাকায় পরিচয় শনাক্তে জটিলতা দেখা দিয়েছিল। পরে উদ্ধার হওয়া বাকিদের সঙ্গে কথা বলে এই ৭ বাংলাদেশিকে শনাক্ত করা হয়।

রোববার (৩০ জানুয়ারি) ইতালির বাংলাদেশ দূতাবাসের বরাত দিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

জানা গেছে, মারা যাওয়া ৭ বাংলাদেশির মধ্যে ৫ জনের বাড়ি মাদারীপুরে। বাকি দুজনের বাড়ি কিশোরগঞ্জ ও সুনামগঞ্জে। তারা হলেন- মাদারীপুর সদর উপজেলার পশ্চিম পিয়ারপুর গ্রামের ইমরান হোসেন, পিয়ারপুর গ্রামের রতন জয় তালুকদার, ঘটকচর গ্রামের সাফায়েত, মোস্তফাপুর গ্রামের জহিরুল এবং মাদারীপুর সদর উপজেলার বাপ্পী। অন্য দুজন হলেন- কিশোরগঞ্জে ভৈরব উপজেলার সাইফুল ও সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার মামুদপুর গ্রামের সাজ্জাদ।

দূতাবাস জানায়, মৃতদের মধ্যে একজন ছাড়া বাকি ছয় জনের পরিচিতরা উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন। তাই ইতোমধ্যে বাংলাদেশে তাদের স্বজনদের কাছে পরিচয় পৌঁছে যাওয়ার কথা। মরদেহগুলো সরকারি খরচে দেশে ফেরত পাঠাতে হলে তাদের পরিচয় নিশ্চিত হতে হবে। পরিচয় নিশ্চিত করতে তাদের পরিবারের সদস্যদের সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়/উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় বা ইতালির রোমে বাংলাদেশ দূতাবাসের কল্যাণ শাখার ইমেইলে (welfare.rome@gmail.com) যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হয়েছে।

এর আগে শুক্রবার রাতে দূতাবাস এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ৭ বাংলাদেশির মরদেহ সিসিলি প্রদেশের এগ্রিজেন্তো এলাকার একটি মর্গে রাখা আছে। লাশগুলো দেশে ফেরানোর জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দূতাবাস। দীর্ঘ সময় তীব্র ঠাণ্ডায় থাকার ফলে ‘হাইপোথার্মিয়া’য় মারা গেছেন ওই বাংলাদেশি।

এদিকে অ্যাগ্রিজেন্তোর পালমা দি মন্তেকিয়ারো পৌর এলাকার গোরস্থানে তাদের দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় মেয়র স্তেফানো কাস্তেল্লিনো। এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করে মেয়র স্তেফানো বলেন, নিহত সাত জনের মরদেহ অ্যাগ্রিজেন্তো প্রভিন্সেরই দ্বীপ লাম্পেদুসাতে রয়েছে। সেখান থেকে যাত্রীবাহী জাহাজে করে রোববার (আজ) সন্ধ্যা নাগাদ সিসিলি’র এম্পেদোকলে বন্দরে নিয়ে আসা হবে।

ইতালির সিসিলি দ্বীপের অ্যাগ্রিজেন্তো শহরের প্রসিকিউটর লুইগি প্যাট্রোনাজ্জিও বিবৃতির বরাত দিয়ে ইতালিয়ান বার্তা সংস্থা এএনএসএ-র প্রতিবেদনে বলা হয়, হাইপোথার্মিয়ায় মারা যাওয়া সাত অভিবাসীর সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। নৌকাটি দুই-তিন দিন আগে লিবিয়া থেকে ইতালির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। জনবসতিহীন ইতালিয়ান দ্বীপ ল্যাম্পেদুসার উপকূল থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে নৌকাটিকে দেখতে পান কোস্টগার্ড সদস্যরা। নৌকায় তিন জনের মৃতদেহ পাওয়া যায়। পরে নৌকাটি বন্দরে ভেড়ানোর আগেই আরও চার জনের মৃত্যু হয়।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.