রাজধানীর মহাখালীতে রাওয়া ক্লাবের সামনের সড়কে মোবাইল ফোনে ধারণকৃত স্বল্পদৈর্ঘ্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এক মিনিট ১৮ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায়, ক্ষুব্ধ এক বিদেশি নাগরিক ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়েছেন। তিনি ‘ইউ ওয়ান্ট মানি’ বলে চিৎকার করে ওই ট্রাফিক পুলিশের সদসের দিকে তেড়ে যাচ্ছেন। এ সময় ট্রাফিক পুলিশের আরেক সদস্য নিবৃত্ত করার চেষ্টা করছেন। তবে ওই বিদেশি নাগরিক বারবার বলছেন, ‘ইউ ওয়ান্ট মানি, আই গিভ ইউ দিস …মানি (তুমি টাকা চাইছ, এই নাও, আমি টাকা দিচ্ছি)’- এই বলে তিনি টাকা ছুড়ে মারছেন।
এ সময় ট্রাফিক পুলিশের ওই সদস্য আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলছেন, তিনি (গাড়ির) যে কাগজ পেয়েছেন তা ‘ফেইল’। এটা নিয়ে বলতেই তিনি ক্ষুব্ধ হয়েছেন। পরে ওই গাড়ির বাংলাদেশি চালককে বলতে শোনা যায়, ‘আপনি আর কথা কইয়েন না, এমনে কেউ ধান্ধা করে?’। পরে ওই বিদেশিকে নিয়ে গাড়ির চালক মেট্রো-গ-৩৩-৮৬৪১ গাড়িটি নিয়ে স্থান ত্যাগ করেন।
ভিডিওটি বিভিন্ন গ্রুপ এবং ব্যক্তির আইডিতে শেয়ার দিয়ে বলা হচ্ছে, কাগজপত্র সব ঠিকঠাক থাকলেও পুলিশ গাড়ি থামিয়ে টাকা চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন ওই বিদেশি। তবে পুলিশের দাবি, এমন অভিযোগ সঠিক নয়। কাগজপত্র যাচাইয়ে কিছুটা সময়ক্ষেপণ হওয়ায় ওই বিদেশি ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীর তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের অধীন থাকা রাওয়া ক্লাবের সামনের রাস্তায় মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) ভিডিওটি ধারণ করেন কোনও এক পথচারী। পরে এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষুব্ধ ওই বিদেশি চীনের নাগরিক। তিনি ঢাকায় একটি তৈরি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন, গাড়িটি তার অফিসের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার সাহেদ আল মাসুদ জানান, ‘তেজগাঁও রাওয়া ক্লাবের সামনে একটি গাড়ি থামিয়ে কাগজপত্র পরীক্ষা করছিল কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশে সদস্য। ওই গাড়িতে একজন বিদেশি নাগরিক ছিলেন। পুলিশ সদস্যরা গাড়ির চালকের সঙ্গেই কথা বলছিলেন। কাগজ যাচাই বাছাই করতে একটু সময় লাগছিল। ওই বিদেশির হয়তো কোনো মিটিং ছিল। দেরি হওয়ার কারণে তিনি বিরক্ত হন। তার মনে হয়েছে, হয়তো চেক করছে টাকার জন্য। আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি, তার সঙ্গে কোনও খারাপ আচরণ করা হয়েছে কি না, তার কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে কি না। এখন পর্যন্ত এ ধরনের তথ্য পাওয়া যায়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিদেশি নাগরিক হলেই যে তার গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা করা যাবে না এমন কোনো কথা নেই। আর দায়িত্বরত ট্র্যাফিক সার্জেন্টের শরীরে ক্যামেরা ছিল। তার ক্যামেরায় সবকিছু রেকর্ড হয়েছে। শুধু ভিডিও নয় সবার সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে এবং যদি সার্জেন্ট টাকা চেয়েই থাকে তাহলে তার শাস্তি হবে।’
এ ঘটনায় ওই বিদেশি নাগরিকের অপরাধ হলেও তার বিরুদ্ধেও তদন্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান সাহেদ আল মাসুদ। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। তদন্ত করা হচ্ছে। কার সমস্যা ছিল, সেটি খুঁজে বের করা হচ্ছে।’
অর্থসূচক/এএইচআর
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.