উপজেলাতেও শুরু হচ্ছে ওএমএস কার্যক্রম: খাদ্যমন্ত্রী

৩০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাবে চাল

মানুষকে নায্য মূল্যে পণ্য দিতে উপজেলা পর্যায়ে শুরু হচ্ছে ওএমএস কার্যক্রম। আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে ১ হাজার ৭০০ ডিলারের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু করবে বলে জানান খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।

আজ বুধবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনের ডিসি সম্মেলনে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওএমএস আমাদের চালু আছে সারাবছর। তবে এটা সীমিত ছিল, ৭৩০টি দোকানে চালু ছিল। আগামীকাল থেকে উপজেলা পর্যায়ে প্রায় ১ হাজার ৭৬০টি ডিলারের মাধ্যমে আমাদের এএমএস চালু হবে। আমাদের চালের মজুদ এখন সর্বকালের সর্ববৃহৎ মজুদ। এটা কোয়ালিটিফুল চালের মজুদ। আমি আশাকরি মানুষ এটা নিয়ে খাবে।

‘ইউনিয়ন পর্যায়ে যেহেতু খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি আছে, ১০ টাকা কেজি চাল আছে এ জন্য ইউনিয়নে এটা চলবে না। কিন্তু একটা উপজেলায় যদি তিনটা পৌরসভাও থাকে সেখানে কর্মসূচি চলবে।’

ওএমএসের মাধ্যমে যে চাল বিক্রি করা হবে সেটির দাম রাখা হয়েছে প্রতি কেজি ৩০ টাকা। আর আটা পাওয়া যাবে প্রতি কেজি ১৮ টাকায়।

ওএমএস কার্যক্রম সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলেও জানান খাদ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ওএমএস যাতে সঠিকভাবে পরিচালনা করা যায় এ জন্য ডিসিদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর থেকে মনিটরিং টিম করা হয়েছে। উপজেলা ও জেলায় যেন সব সময় মনিটরিং হয়।

‘যদি কেউ অবৈধ মজুদ করে রাখে এটাও বলা হয়েছৈ তাদেরকে প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট করা, মজুদ থাকলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে আমরা চিঠি দিয়ে নির্দেশ দিয়েছি। আমরা এটা টাস্কফোর্স করে মন্ত্রণালয়ে কন্ট্রোল রুমও করেছি।’

তিনি বলেন, ‘ডিসিদের বলা হয়েছে, ডিলাররা ২ টন চাল নিয়ে গেলেও সেটা ওইদিন বিক্রি করার কথা। দেড় টন বিক্রি করে বাকিটা ব্ল্যাকে বিক্রি করে এটা হলো একটি বড় সমস্যা।

দেশে খাদ্যের কোনো অভাব নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগে ভারত থেকে গরু আসতো। এখানে কোনো খামার ছিল না, সেটা কোরবানির গরু বলেন বা মাংসের জন্য যাই বলেন। সব ভারত থেকে অবৈধভাবে আসতো, আমরা বড় বড় গরু দেখতাম। এখন কিন্তু আমাদের দেশে ভারত থেকে আর গরু আসে না। দেশেই উৎপাদন হয় এবং অনেক খামার।

‘গরু মোটাতাজা করার জন্যও অনেক চাল কিন্তু চলে যায়। সেখানেও একটি বিষয় রয়েছে। চালের কিন্তু হাহাকার নাই। উৎপাদন যেমন বেড়েছে, হিউম্যান অ্যান্ড নন হিউম্যান কনজামশন দুটোই কিন্তু বেড়েছে।’

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আরেকটি বিষয় মানুষ এখন চিকন চাল খাবার প্রবণতা বেড়েছে। একজন রিকশাওয়ালা পর্যন্ত সরু চাল খেতে চান। সরু চালের উপর চাপ তো একটু পড়েছেই। করপোরেট যেগুলো আছে, বসুন্ধরা বলেন আর প্রাণ বলেন। এরা বাজার থেকে নগদ দামে সরু চালটা তুলে নিয়ে প্যাকেট করে। প্যাকেটে বেশি দামে অনেকে কিন্তু কেনে। এখানে বাজারে একটি শর্টেজ পড়তে পারে।

‘সরু চালের কিন্তু এখন অফ টাইম। সাধারণত বোরো মৌসুমে এটা উৎপাদন হয়, এখন ধান লাগাবে। আমরা এটা কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা ফাইলও পাঠিয়েছি, আরও কিছু ট্যাক্স কমিয়ে সরু চাল বেসরকারিভাবে আমদানি করা যায় কিনা। তবে এটাও ঠিক, আমরা সুষ্ঠু মনিটরিংয়ে আছি, আপনারাও যদি কোনো অবৈধ মজুদ সম্বন্ধে জানেন তাহলে আমাদের জানালে আমরা যদি সেখানে হানা দিতে পারি, তাহলে আমার বিশ্বাস চালের দাম নিয়ন্ত্রণের বাহিরে যাওয়ার কোনো অবস্থা নেই।’

তিনি আরো বলেন, ‘আবার আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, গমের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। মিনিকেট বলে কোনো চাল নেই, কিন্তু ব্র্যান্ড আছে। ভারত থেকে যে মিনিকেট আসে আমরা ২৫ ভাগ পর্যন্ত ট্যাক্স এনে দেয়ার পরও ১৭ লাখের অর্ডার করে মাত্র ১০ হাজার পেয়েছি। তার অর্থ সেখানে এতো দাম বেড়েছে সেটা এনে এখানে পোষাচ্ছে না। শিপের ভাড়াও চার-পাঁচগুন বেশি বেড়েছে।’

অর্থসূচক/এমএস/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.