লাথাম-কনওয়ের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের হতাশার দিন

মাউন্ট মঙ্গানুইতে দুর্দান্ত বোলিং করলেও ক্রাইস্টচার্চের সবুজাভ উইকেটে বিবর্ণ বাংলাদেশের তিন পেসার। সহায়ক কন্ডিশনেও নিউজিল্যান্ডের ব্যাটারদের সেভাবে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেননি তাসকিন আহমেদ-শরিফুল ইসলামরা। বরং আলগা বল করে টম লাথাম-ডেভন কনওয়েদের রান তোলায় সুবিধা করে দিয়েছেন। ডাবল সেঞ্চুরির অপেক্ষায় থাকা কিউই অধিনায়কের ব্যাটে প্রথম দিন নিউজিল্যান্ডের দাপট। লাথামকে সঙ্গ দেয়া কনওয়ে অপেক্ষায় রয়েছেন সেঞ্চুরি। পুরো দিন জুড়ে বাংলাদেশের প্রাপ্তি মোটে এক উইকেট। তাতে হতাশার একদিন পার করলো বাংলাদেশ।

ক্রাইস্টচার্চে টস জিতে বোলিং নিলেও সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশ। নতুন বলে প্রথম ঘণ্টা সতর্কতার সঙ্গে কাটিয়েছে নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার টম লাথাম এবং উইল ইয়ং। মাউন্ট মঙ্গানুইতে প্রথম দিনের প্রথম ঘণ্টায় তাসকিন আহমেদ এবং শরিফুল ইসলাম দুর্দান্ত বোলিং করলেও এদিন ছিলেন কিছুটা অগোছালো। তাতে নবম ওভারে এবাদত হোসেনকে বোলিংয়ে আনেন মুমিনুল।

লাথামের কাছে চার খেয়ে ওভার শুরু করেন ডানহাতি এই পেসার। পরের বলেই অবশ্য লাথামের থাই প্যাডে আঘাত হানেন এবাদতের বল। লেগ বিফোর উইকেটের আবেদন করার সঙ্গে সঙ্গে আউট দেন আম্পায়ার। যদিও লাথাম রিভিউ নিলে রিপ্লেতে দেখা যায় বলটি লেগ স্টাম্প মিস করেছে, তাতে বেঁচে যান কিউই অধিনায়ক।

একই ওভারের পঞ্চম বলে আবারও লাথামকে আউট দেন আম্পায়ার। এবারও রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান বাঁহাতি এই ব্যাটার। এরপর সতর্কতার সঙ্গে ব্যাটিং করেন কিউই দুই ওপেনার। প্রথম ১২ ওভারে ৩৪ রান তুললেও পরবর্তীতে রান তোলার গতি বাড়িয়ে দেন। ইয়ং ধীরগতির ব্যাটিং করলেও ৬৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন লাথাম। অধিনায়ক হিসেবে এটি তার প্রথম হাফ সেঞ্চুরি।

প্রথম সেশন শেষ হওয়ার একটু আগে তাসকিনের বলে লাথামের বিপক্ষে লেগ বিফোরের উইকেটের আবেদন করে বাংলাদেশ। তবে সাড়া দেননি আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিতে গিয়ে দেরি করায় আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেনি টাইগাররা। এরপর দু-একবার লাথামের ব্যাটের কানায় লাগলেও উইকেটের দেখা পায়নি সফরকারীরা।

মধ্যাহ্ন বিরতি থেকে ফিরেই সুযোগ তৈরি করেছিলেন এবাদত। ডানহাতি এই পেসারের বল ইয়ংয়ের ব্যাটে ছুঁয়ে উইকেটের পেছনে যায়। প্রথম স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা নাজমুল হোসেন শান্তর জন্য সহজ ক্যাচ হলেও দ্বিতীয় স্লিপ থেকে ডাইভ দিয়ে ধরতে গিয়ে সুযোগ হাতছাড়া করেন লিটন দাস। এরপর মেহেদি হাসান মিরাজের বলে বাউন্ডারি মেরে ৯৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন ইয়ং। ডানহাতি এই ওপেনারকে ৫৪ রানে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে প্রথম উইকেট এনে দেন শরিফুল। এরপরের গল্পটা কেবলই লাথাম এবং ডেভন কনওয়ের। ৬৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেয়া লাথাম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ১৩৩ বলে।

মিরাজের বল ডিপ স্কয়ারে ঠেলে দিয়ে এক রান নিয়ে ক্যারিয়ারের ১২তম সেঞ্চুরি তুলে নেন লাথাম। দ্বিতীয় সেশনে ২৯ ওভার বোলিং করে ১১০ রান দেয় বাংলাদেশের বোলাররা। এদিকে কিউই অধিনায়ককে দারুণভাবে সঙ্গ দেয়া কনওয়ে ৮৩ বলে হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। এদিন প্রথম ব্যাটার হিসেবে ক্যারিয়ারের প্রথম ৫ টেস্টের প্রথম ইনিংসে পঞ্চাশোর্ধো ইনিংস খেলেছেন তিনি। দারুণ ব্যাটিং করা বাঁহাতি এই ব্যাটার সেঞ্চুরি থেকে মাত্র একরান দূরে থাকতেই শেষ হয় প্রথম দিনের খেলা। এদিকে ডাবল সেঞ্চুরির অপেক্ষায় থাকা লাথাম অপরাজিত রয়েছেন ১৮৬ রানে। এই দুই ব্যাটারের কল্যাণে প্রথম দিন শেষে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৩৪৯ রান। বাংলাদেশের হয়ে একমাত্র উইকেটটি পেয়েছেন শরিফুল।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.