রেমিট্যান্সে আড়াই শতাংশ নগদ সহায়তা দিতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ

এখন থেকে বৈধ উপায়ে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে আড়াই শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দিতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আজ রোববার (২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের পাঠিয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জনমানুষের সার্বিক জীবনমান উন্নয়ন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসীদের প্রেরিত রেমিট্যান্সের গুরুত্ব বিবেচনায় বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমজীবী মানুষের কষ্টার্জিত আয় বৈধ উপায়ে দেশে আনতে উৎসাহিত করতে রেমিট্যান্স প্রেরণের বিপরীতে সরকার ২ শতাংশ নগদ সহায়তা বিদ্যমান হার বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫০ শতাংশ নির্ধারণ করেছে।

বর্ধিত এ হার চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের ১ জানুয়ারি ২০২২ থেকে কার্যকর হবে। এছাড়া রেমিট্যান্স প্রেরণের বিপরীতে প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা সংক্রান্ত অন্যান্য নির্দেশনা যথারীতি বলবৎ থাকবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন সিদ্ধান্তের ফলে, প্রবাসীরা ১০০ টাকা দেশে পাঠালে ১০০ টাকার সঙ্গে আড়াই টাকা যোগ করে ১০২ টাকা ৫০ পয়সা তুলতে পারবেন। এতোদিন রেমিট্যান্সে দুই শতাংশ হারে সহায়তা পেতেন প্রবাসীরা। অর্থাৎ ১০০ টাকার সঙ্গে ২ টাকা যোগ করে ১০২ টাকা পেতেন।

এর আগে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে সরকার প্রথমবারের মতো ২ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এ নীতি সহায়তার কারণে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠানোর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৮২০ কোটি ডলার। যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ১৩ শতাংশ বেশি।

এছাড়া, ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৮০ কোটি ডলার, যা ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৩৬ শতাংশ বেশি। আর চলতি অর্থবছরে প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) ৮৬০ কোটি ৯২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

এদিকে, ১ জানুয়ারি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, ‘রেমিট্যান্স বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক এলাকায় কত বড় ভূমিকা রাখে সেটি অর্থনীতিবিদরা বুঝবেন এবং তারা আমার সঙ্গে একমত পোষণ করবেন যে, এটি অসাধারণ ভালো কাজ হয়েছে। আমরা এটাকে সঠিক চ্যানেলে আনার চেষ্টা করছি। আমরা রেমিট্যান্স পাচ্ছিলাম না, কারণ সেটা ইনফরমাল চ্যানেলে চলে যাচ্ছিল। সেই চ্যানেলটাকে অনুৎসাহিত করব এবং ফরমাল চ্যানেলেই পুরোটা অর্জন করতে চাই।

সেজন্যই প্রণোদনা ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২.৫ শতাংশ করা হয়েছে। আজ থেকে এটি কার্যকর। আশা করি এই অর্থবছরে ২৬ বিলিয়ন অর্জন হবে।’

পরে ওইদিন রাতেই অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে উপসচিব মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। সেখানে বাংলাদেশ ব্যাংককে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.