লঞ্চে আগুন: ভেসে উঠলো আরও একটি লাশ

সুগন্ধা নদীতে যাত্রীবাহী লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আজ পঞ্চম দিনের মতো উদ্ধার অভিযান চলছে। অগ্নিকাণ্ডের সময় প্রাণ বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়াদের খুঁজতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকর্মীরা সকাল থেকে সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে সন্ধান চালাচ্ছে।

এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে ৮টার দিকে ঝালকাঠি লঞ্চঘাট সংলগ্ন সুগন্ধা নদীর দক্ষিণ তীর থেকে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহের শরীরে আগুনে পোড়ার চিহ্ন রয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিন ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, সকাল ৮টায় সুগন্ধা নদীতে লাশ ভেসে উঠতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর দিলে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল উদ্ধার করে। লাশটি পুরুষের। বয়স আনুমানিক ৩০ বছর। মুখমন্ডল ঝলসে গেছে গায়ে সোয়েটার রয়েছে। এখনও পরিচয় শনাক্ত হয়নি।

ঝালকাঠি সদর থানার ওসি (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম সোহাগ জানান, এর আগে গতকাল সোমবার লঞ্চের ক্যান্টিনের বাবুর্চি শাকিল মোল্লার লাশ উদ্ধার করা হয়। নারায়ণগঞ্চের ফতুল্লার বাসিন্দা তিনি। তার মামা লুৎফর রহমান লাশ শনাক্তের পরে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী লঞ্চ এমভি অভিযান-১০ এ অগ্নিকাণ্ড ও প্রাণহানির ঘটনায় ঝালকাঠি সদর থানায় আরেকটি মামলা দায়ের হয়েছে। সোমবার রাতে নিখোঁজ যাত্রীদের স্বজন মো. মনির হোসেন (৩৮) বাদি হয়ে ২৮০/২৮৫/২৮৭ এবং ৩০৪ক/১০৯ পেনাল কোর্ড ধারায় এ মামলাটি দায়ের করেন। ঝালকাঠি সদর থানার মামলা নম্বর ১২। এ মামলায় অভিযান-১০ লঞ্চের মালিক, চালকসহ নামধারী ৮ জন, অজ্ঞাত আরো ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

ঝালকাঠি সদর থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি অপারেশন) মো. মালেক জানান, ঢাকা ডেমরা এলাকার খলিলুর রহমানের ছেলে মো. মনির হোসেনের লিখিত এজাহারটি গ্রহণ করে মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে।

এতে আসামি করা হয়েছে- অভিযান ১০ লঞ্চের মালিক হামজালাল শেখ, লঞ্চে থাকা দুই মাস্টার রিয়াজ সিকদার ও মো. খলিল, দুই ড্রাইভার মো. মাসুম ও কালাম, সুপারভাইজার মো. আনোয়ার, সুকানী আহসান এবং কেরানী কামরুল।

মামলার বাদি রাজধানীর ডেমরা থানার পুর্ব বক্সনগর এলাকার বাসিন্দা মো. মনির হোসেন বলেন, লঞ্চে আগুনের ঘটনায় এই লঞ্চে থাকা যাত্রী তার বোন তাসলিমা আক্তার (৩২), দুই ভাগনি সুমাইয়া আক্তার মীম (১৫) সুমনা আক্তার তানিশা (১০) এবং ৭ বছর বয়সী ভাতিজা জোনায়েদ ইসলাম বায়জিত এখনো নিখোঁজ রয়েছে।

মনির হোসেন মামলার এজাহারে লিখেছেন রাতে লঞ্চের ইঞ্জিনে যখন ত্রুটি দেখা দেয় তখনো লঞ্চের স্টাফরা যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া তুলতে থাকেন। লঞ্চটির নিচতলার পেছনের অংশে থাকা ইঞ্জিন রুমের ওখান থেকে যখন আগুন ধরে যায় তখন চালক ও স্টাফরা যাত্রীদের বাঁচাতে লঞ্চ তীরে ভিড়ানোর বা নোঙ্গর করার চেষ্টাটুকও করেননি। বরং নিজেরা ঝাঁপিয়ে পরে পালিয়েছেন। মামলায় এজাহারে লঞ্চটিতে নিরাপত্তা সামগ্রীর ঘাটতির কথাও উল্লেখ করা হয়।

ঝালকাঠিতে লঞ্চ দুর্ঘটনায় এটি ২য় মামলা। এর আগে গত ২৫ ডিসেম্বর একই থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হয়। সেটিতে বাদি হয়েছেন ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের গ্রামপুলিশ মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.