খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার মতামত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসায় পরিবারের আবেদনের বিষয়ে মতামত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। আইনি মতামত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানিয়েছেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমি খালেদা জিয়ার ভাইয়ের আবেদনের বিষয়ে আইনি মতামত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পাঠিয়েছি।

‘প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে যেহেতু ফাইল যাবে, এজন্য এটা এভাবে বলতে পারি না। এটা প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত যাবে, তারপর আপনারা সিদ্ধান্ত জানতে পারবেন।’

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ৫ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে কারাগারে যাওয়া বেগম খালেদা জিয়ার দণ্ড পরে আপিলে দ্বিগুণ হয়। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় তার হয় ৭ বছরের কারাদণ্ড।

উচ্চ আদালতে জামিন করাতে ব্যর্থ হওয়ার পর খালেদা জিয়ার স্বজনরা গত বছর প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন নিয়ে যান। সরকার প্রধানের নির্বাহী আদেশে দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় ফেরেন খালেদা জিয়া।

এরপর তার সাময়িক মুক্তির মেয়াদ আরও কয়েক দফা বাড়ানো হয়।

দণ্ডবিধির ৪০১ ধারা ব্যবহার করে দুর্নীতির দুই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনের দণ্ড স্থগিত করিয়ে ২০২০ সালের মার্চে তার মুক্তির ব্যবস্থা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে সময়ই শর্ত ছিল তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না।

তবে মুক্ত হওয়ার পর বিএনপি নেত্রীর স্বজনরা সরকারের কাছে একাধিকবার তাকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। গত এপ্রিলে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর এক দফা সেই দাবি নাকচ করে সরকার।

সম্প্রতি খালেদা জিয়াকে আবার হাসপাতালে নেয়া হলে এই দাবি আবার তুলে ধরে তার স্বজন ও দল। সরকার এবারও নাচক করলে বিএনপি শুরু করে আন্দোলন কর্মসূচি।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মাঝে দাবি করেছেন, তাদের নেত্রী জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আছেন। বিদেশে পাঠাতে দেরি হলে তাকে বাঁচানো কঠিন হয়ে যাবে, এমন দাবিও করেন তিনি।

করোনা থেকে সুস্থের পর নভেম্বরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন খালেদা জিয়া। তার লিভার সিরোসিস হয়েছে বলে জানান চিকিৎসকরা। তখন থেকেই তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন।

গত ২৮ নভেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিসের কারণে ব্লিডিং হচ্ছে জানিয়ে তার চিকিৎসায় গঠিত দলের মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকরা যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র বা জার্মানির বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার সুপারিশ করেন।

তখন আবারও খালেদাকে বিদেশ নিতে সরকারের কাছে আবেদন করেন তার ভাই শামীম ইস্কান্দার। সে আবেদনেই মতামত দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কথা জানান আইনমন্ত্রী।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.