জাপানি ২ শিশুকে নিয়ে আদালতে বাবা

জাপানি দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনাকে নিয়ে আপিল বিভাগে হাজির হয়েছেন বাবা ইমরান শরীফ। কিছুক্ষণ পর আপিল বিভাগে এ বিষয়ে শুনানি হবে।

সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে শিশুদের নিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে হাজির হন তিনি। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে দুই শিশুকে আদালতে হাজির করতে তাদের বাবা শরীফ ইমরানকে নির্দেশ দিয়েছে আপিল বিভাগ।

ইমরান শরীফের বিরুদ্ধে শিশু দুটির মা আদালতের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ আনার পর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এমন আদেশ দেন।

রোববার রাত ১০টার মধ্যে দুই শিশুকে মায়ের কাছে দেওয়ার কথা থাকলেও দেননি বাবা শরীফ ইমরান। এই নির্দেশনা না অমান্য করার অভিযোগ আনার পর আদালত এমন আদেশ দেন।

গত ২১ নভেম্বর জাপানি দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা বাংলাদেশে তাদের বাবা ইমরান শরীফের কাছে থাকবে বলে রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে হাইকোর্ট বলেন, ‘যেহেতু মা জাপানি নাগরিক, সেখানে তার বসবাস ও কর্মস্থল সে কারণে তিনি তার সুবিধামত সময়ে বাংলাদেশে এসে শিশুদের সঙ্গে প্রতিবার কমপক্ষে ১০ দিন একান্তে সময় কাটাতে পারবেন। এক্ষেত্রে বছরে তিন বার বাংলাদেশে তার যাওয়া আসাসহ ১০ দিন অবস্থানের যাবতীয় খরচ শিশু দুটির বাবাকে বহন করত হবে। তবে এর চেয়ে অতিরিক্ত যাওয়া-আসা বা বাংলাদেশে অবস্থানের ক্ষেত্রে খরচ মা নিজে বহন করবেন। এছাড়া বাবা মাসে কমপক্ষে দুই বার শিশু সন্তানদের ভিডিও কলে মায়ের সঙ্গে কথা বলার ব্যবস্থা করে দেবেন।’

এছাড়া গত কয়েক মাস বাংলাদেশে অবস্থান ও যাতায়াত বাবদ ওই মাকে ১০ লাখ টাকা সাত দিনের মধ্যে দিতে শিশুদের বাবার প্রতি নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সংশ্লিষ্ট সমাজ সেবা কর্মকর্তাকে এই শিশুদের দেখভাল অব্যাহত রাখতে এবং প্রতি তিন মাস পর পর শিশুদের বিষয়ে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার বরাবর প্রতিবেদন দিতে হাইকোর্ট নির্দেশ দেন।

অন্যদিকে জাপানে থাকা এদের আরেক মেয়েকে হাইকোর্টে হাজিরের নির্দেশনা চেয়ে ইমরান শরীফের করা রিটটি খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। আদালতে ইমরান শরীফের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। তাদের সাথে ছিলেন আইনজীবী ফেরজা পারভিন, কাজী মারুফুল আলম ও ফাইজা মেহরিন। আর জাপানি মা এরিকো নাকানোর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী শিশির মনির, তার সাথে ছিলেন আইনজীবী সাদ্দাম হোসেন।

আদালতে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো (৪৬) ও ইমরান শরীফ (৫৮) ২০০৮ সালের ১১ জুলাই দুজনের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী টোকিওতে বিয়ে করেন। এক যুগের দাম্পত্য জীবনে তারা তিন কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। এই দম্পতির ১১, ১০ ও ৭ বছর বয়সী তিন মেয়ে টোকিওর একটি স্কুলে পড়ত। তবে বিভিন্ন কারণে দাম্পত্য বিবাদের জেরে চলতি বছরের গত ১৮ জানুয়ারি বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করেন শিশুদের মা এরিকো।

সন্তানদের জিম্মায় চেয়ে টোকিওর পারিবারিক আদালতে গত ২৮ জানুয়ারি মামলা করেন এরিকো। এর মধ্যেই গত ২১ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়েকে নিয়ে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন ইমরান শরীফ। এরপর গত ১৮ জুলাই শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশে আসেন নাকানো এরিকো। এরপর হাইকোর্টে এ সংক্রান্ত একটি রিট করেন।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.