নাগরিক ডাটাবেজ তৈরি করবে বিবিএস

নাগরিকের তথ্য সংগ্রহের লক্ষে নাগরিক ডাটাবেজ তৈরি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। ডাটাবেজটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্ট্রার-এনপিআর’। এ ছাড়া পলিসি লেবেলে এনপিআরের কাজ চলছে বলেও জানিয়েছেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন।

বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘মহামারি চলাকালে ডাটাচালিত নীতি তৈরি: অভিজ্ঞতাকে এগিয়ে নেওয়া’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।

জানা গেছে, এনপিআরে একজন নাগরিকের ৩৩ ধরনের তথ্য থাকবে। এরমধ্যে অন্যতম হলো- ব্যক্তির নাম, এনআইডি, পাসপোর্ট, জন্মনিবন্ধন, মোবাইল নম্বর, ইমেইল, জরুরি নম্বর, পিতা-মাতার নাম, স্ত্রী/স্বামীর নাম, বসতবাড়ি, জন্মতারিখ, লিঙ্গ, বৈবাহিক অবস্থা, জন্মস্থান, জাতীয়তা, ধর্ম, রক্তের গ্রুপ, রেসিডেন্স স্ট্যাটাস, বর্তমান ঠিকানা, বাড়ির ধরন, পানির উৎস/স্যানিটেশন/আলোর উৎস, স্থায়ী ঠিকানা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা, নাগরিকত্ব, কান্ট্রি মাইগ্রেশন, করোনিক ডিজিস, জেনেটিক ডিজিস প্রভৃতি।

একজন নাগরিকের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সব ধরনের তথ্য থাকবে। এই তথ্য ভোটারের জন্য নির্বাচন কমিশনও ব্যবহার করতে পারবে। মানুষের মৃত্যু হলেও হাজার বছর তার তথ্য সংরক্ষিত থাকবে।

সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন বলেন, ‘এনপিআর নিয়ে আমরা কাজ করছি। এ জন্য প্রাথমিক পদক্ষেপ নিয়েছি। এনপিআর আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য অনেক প্রয়োজন।’

ডাটা সংগ্রহ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) দেশের জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা হিসেবে কাজ করছে। বাংলাদেশে সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন, উন্নয়ন ও অগ্রগতি পর্যবেক্ষণে পরিসংখ্যানের গুরুত্ব অনেক। নানান জরিপ ও শুমারি পরিচালনা করে আসছে বিবিএস। ফলে সরকার উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। দেশে-বিদেশে বিবিএস ডাটার অনেক সুনাম রয়েছে।

সচিব বলেন, দেশ ও জাতির কল্যাণে আমরা কোয়ালিটিফুল ডাটা সার্ভ করবো। সরকার কোয়ালিটিফুল ডাটা দিতে বদ্ধ পরিকর। ডাটা নিয়ে গ্রামের মানুষের কথা বলতে চাই। আমরা চেষ্টা করছি, সঠিক ডাটা সরবারহ করার জন্য। আমরা নানা ইস্যুতে গবেষণা করেো। এটা শুরু হলো মাত্র। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সবার জন্য কোয়ালিটি ডাটা সরবরাহ করবো।

বিবিএস মহাপরিচালক তাজুল ইসলাম বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খাতে অবদানের জন্য বিবিএস মানসম্মত ডাটা সাপোর্ট দিচ্ছে। সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থায় বিবিএসের ডাটা ব্যবহার হচ্ছে। বিবিএস টেলিফোন নিয়ে সার্ভে করবে। মূলত করোনা সংকটের কারণেই এই ডাটা সংগ্রহ করা হবে। করোনাকালে দ্রুত সময়ে দরিদ্রের তারিকা করা হবে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার সব সময় কোয়ালিটিফুল ডাটা সংগ্রহের জন্য জোর দিচ্ছে। অষ্টম ও পঞ্চম বার্ষিকি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ডাটা সংগ্রহে কাজ করেছে বিবিএস। ডাটা সরবরাহ করেও বাজেট প্রণয়নে বিবিএস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মাথাপিছু আয়, জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও গড় আয়ুর ডাটা বিবিএস সরবরাহ করে থাকে।

সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য দেবপ্রিয় বলেন, ‘অনেক সময় ডাটা সরবরাহে কারিগরি সমস্যা আছে। ডাটা সরবরাহে নানা সমস্যা দেখা যায়। সঠিক ডাটা সরবরাহে নানান দিক চিন্তাও করা হয়। অনেক সময় সঠিক ডাটা সরবরাহে ভিত্তিও থাকতে পারে। রজানীতিবিদের রাজনৈতিক বক্তব্য না মিললে সঠিক ডাটা আলোরমুখ দেখে না।’

সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান, সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানসহ সংশ্লিষ্টরা ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় অংশ নেন।

অর্থসূচক/আরএমএস/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.