বাসে ধর্ষণের হুমকি: আল্টিমেটাম দিয়ে সড়ক ছাড়লো শিক্ষার্থীরা

হাফ ভাড়া দিতে চাওয়ায় বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া বাস চালকের সহকারীকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দিয়ে সড়ক থেকে সরে গেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২১ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে তিন দফা দাবির কথা জানিয়ে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন তারা। বাসচালকের সহকারীকে গ্রেপ্তার ছাড়াও বাসে নারী শিক্ষার্থীদের হয়রানি বন্ধ করা ও সারা দেশে শিক্ষার্থীদের হাফ পাস চালুর দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

গতকাল শনিবার রাজধানীর শনির আখড়ায় ঠিকানা পরিবহনের একটি বাসে বদরুন্নেসা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী অর্ধেক ভাড়া দিতে চায়। কিন্তু চালকের সহকারী হাফ ভাড়া নিতে অস্বীকৃতি জানায়। একপর্যায়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেয় বাসচালকের সহকারী। এর প্রতিবাদে আজ সকাল নয়টার দিকে কলেজ প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করতে থাকেন বদরুন্নেসার শিক্ষার্থীরা। ঘণ্টাখানেক সময় ভেতরে বিক্ষোভ করার পর তারা বকশিবাজার মোড় অবরোধ করেন। ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ বলে স্লোগান দেন তারা। ‘হাফ পাস আমাদের অধিকার’, ‘এই হলো দেশের কঠোর বাস্তবতা, নিজের অধিকার চাইতে মেলে ধর্ষণের বার্তা’ প্রভৃতি লেখা প্ল্যাকার্ড ছিল তাদের হাতে।

শিক্ষার্থীদের অবরোধের ফলে বুয়েট, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও হোসেনি দালান সংলগ্ন সড়কগুলোতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে সরাতে চেষ্টা চালাতে থাকে পুলিশ। শেষ পর্যন্ত তিন দফা দাবির কথা জানিয়ে দুই ঘণ্টা পর সড়ক থেকে সরে যায় শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের এক সহপাঠী ঠিকানা পরিবহনের একটি বাসে করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসার সময় হাফ ভাড়া দিতে চাইলে বাসের কন্ট্রাক্টর এসময় ওই শিক্ষার্থীকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। এমনকি তাকে ধর্ষণেরও হুমকি দেওয়া হয় বলে তারা অভিযোগ করেন। এর প্রতিবাদে তারা সড়ক অবরোধ করেছেন।

শিক্ষার্থীরা আরো অভিযোগ করেন, তারা বাসে উঠলে সংরক্ষিত আসন পান না, চলন্ত বাস থেকেই তাদের দ্রুত নামতে বলা হয়, হাফ ভাড়া নেওয়া হয় না। বাস চালকের সহকারী ও কন্ট্রাক্টর সবসময় কথা শোনায়, হয়রানি করে; এসব বন্ধ করতে হবে। হাফ ভাড়া নিতে হবে, বাসে যৌন হয়রানি বন্ধ করতে হবে এবং বাসে ওঠা ও নামার সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’

বদরুন্নেসার শারমিন নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ঠিকানাসহ সবগুলো পরিবহনের বাসে মেয়েদের হয়রানি করা হয়। আমাদের কোনও আসন দেওয়া হয় না। আবার হাফ ভাড়া দিলে আমাদের অশ্লীল কথা শুনতে হয়।

অপর এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা নারীরা বাসে নানা হয়রানির শিকার হই। নানা অশোভন আচরণ করে বাসের হেলপাররা। আমরা এর প্রতিকার চাই। আমাদের হাফ ভাড়া নিতে হবে, সেই দাবিও জানাই। বাসে উঠতে চাইলে বাস থামায় না। আবার নামার সময় ভালোভাবে নামায় না। আবার নানা ধরনের হয়রানি করে। এসব থেকে পরিত্রাণ চাই আমরা।

এ বিষয়ে চকবাজার জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) কুদরাত-ই খুদা বলেন, ‘আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ‌্যে এ বিষয়ে ব‌্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ডিএমপির চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাইউম জানান, শিক্ষার্থীরা সড়ক ছেড়ে চলে গেছে। এখন যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.