ঢাবির দুই ভিসির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ও সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশনা থাকার পরও ঢাবি শিক্ষক আয়েষা মাহমুদাকে মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা না দেওয়া এবং আদেশ যথাযথভাবে পালন না করায় এ রুল জারি করেন আদালত।

বুধবার (৩ নভেম্বর) এ সংক্রান্ত রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

রিট আবেদনকারী ঢাবির মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আয়েষা মাহমুদ ও তার পক্ষের আবেদনকারী আইনজীবী মো. আমিনুর রহমান চৌধুরী আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

রুলে আদালতের আদেশ পালন না করায় বিবাদীদের (বর্তমান ও সাবেক দুই ভিসিসহ চারজনের) বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

ঢাবির বর্তমান ভিসি ড. মো. আখতারুজ্জামান, সাবেক ভিসি ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার ও সাবেক রেজিস্ট্রার রেজাউর রহমানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. আছরারুল হক, তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান চৌধুরী।

আদেশের বিষয়ে আইনজীবী মো.আছরারুল হক জানান, ২০০৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তৎকালীন রেজিস্ট্রার রেজাউর রহমান ওই বছরের মে মাসে মনোবিজ্ঞান বিভাগের তিন শিক্ষককের পদোন্নতি দেন। সিনিয়র হওয়ার পরও পদোন্নতি না পেয়ে একই বিভাগের অপর শিক্ষক আয়েষা মাহমুদ ২০০৮ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেন আদালত। রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ২০০৯ সালের ১১ আগস্ট হাইকোর্ট তাকে ২০০৬ সালের মে মাস থেকে পদোন্নতি দিয়ে জ্যেষ্ঠ পদমর্যাদার সব সুযোগ-সুবিধা দিতে নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে ওই তিন শিক্ষকের পদোন্নতির আদেশ বাতিল করা হয়।

এর বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আপিল করে। আপিলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেন, আয়েষা মাহমুদকে সিনিয়রিটিসহ ২০০৬ সাল থেকে ভূতাপেক্ষ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাকি তিন শিক্ষকের পদোন্নতি বহাল থাকলেও আয়েষা মাহমুদের কোনো ক্ষতি হবে না। এরপর আপিল বিভাগ ২০১০ সালের ৮ এপ্রিল রায় দেন। হাইকোর্টের রায় সংশোধন করে তিন শিক্ষকের পদোন্নতি বহাল করেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে আয়েষা মাহমুদকে নিয়ে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন।

আইনজীবী আছারারুল হক বলেন, আদালতের আদেশের পরও ঢাবি কর্তৃপক্ষ কৌশলে আয়েষা মাহমুদকে সিনিয়রটি হিসেবে দুই নম্বরে রাখলেন। কিন্তু সিনিয়রিটি হিসেবে এক নম্বরে দেওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে সিনিয়রিটি হিসেবে এক নম্বরে থাকা ওই তিন শিক্ষকের একজন চেয়ারম্যান হয়েছেন। ফলে তিনি আদালত অবমাননার আবেদন করেছেন। আদালত আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ রুল জারি করেছেন।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.