দেশে সারাবছর পর্যাপ্ত আম পাওয়া যাবে: কৃষিমন্ত্রী

কৃষি প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই সারাবছরে আম পাওয়া সম্ভব বলে জানান কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক।

রোববার (২৪ অক্টোবর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বণিক বার্তা ও বিএজেএফ এর যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত “বাংলাদেশের ৫০ বছর: কৃষির রূপান্তর ও অর্জন” শীর্ষক কৃষি সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের বিজ্ঞানীরা ও উন্নয়ন কর্মকর্তারা মনে করছেন কৃষি প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে আগামী ৫-৬ বছরের মধ্যে সারা বছর পর্যাপ্ত আম পাওয়া যাবে।

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, বাংলাদেশ এখন অনেকটাই খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, সারা পৃথিবীই তা বলছে। এই যে করোনা পরিস্থিতিতেও কেউ না খেয়ে নেই, খাদ্যে সংকট নেই, হাহাকার নেই। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে আমরা পুষ্টি জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিতে চাই। সে জন্য বাংলাদেশকে আমরা আধুনিক কৃষিতে নিয়ে যেতে চাই।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ দানাজাতীয় খাদ্যে অনেক আগেই সফল হয়েছে। সেটাকে যদি আমরা পুষ্টিজাতীয় খাবারে নিয়ে যেতে পারি। অর্থাৎ মাছ, মাংস, দুধ, ডিম ইত্যাদিতেও স্বয়ংসম্পূর্ণ ও সফল হতে হবে। সে জন্য কৃষি প্রযুক্তিকে আমরা আরও উন্নতি করে এটা করবো।

কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের মাটি অত্যন্ত উর্বর এবং এখানে বিশুদ্ধ পানি খুব সহজলভ্য। ২০-৩০ ফুট নিচেই বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যায়। যা অন্য কোনো দেশে পাওয়া যায় না। মাটির উর্বরতা ও পানির সহজলভ্যতার সঠিক ব্যবহারে আমাদের দেশে কৃষি এগিয়ে যাবে। দেশে কৃষি এখন সামাজিক মর্যাদা পেয়েছে এবং শিক্ষিত ছেলে-মেয়েরাও কৃষি কাজে ভূমিকা রাখছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, এক সময় কৃষিকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা হতো। ‘চাষা’ শব্দটা গালি হিসেবে ব্যবহৃত হত। কিন্তু এখন শিক্ষিত ছেলে-মেয়েরাও কৃষিতে আসছে। তাদেরকে নিয়ে দেশের কৃষিকে আরও বেশি সমৃদ্ধ করবো।

দেশের চাহিদা মিটিয়ে বাংলাদেশের কৃষিপণ্য আন্তর্জাতিক বাজার দখল করবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কৃষি প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে এবং আমরা সারাবিশ্বে খাদ্য সরবরাহ করতে পারব।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের (ব্রি) মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবির। তিনি বলেন, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের কৃষিতে বিশাল রূপান্তর হয়েছে। ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় তিন থেকে চার গুণ। আজ আমরা বাণিজ্যিক কৃষির কথা ভাবছি।

তিনি আরও বলেন, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিশাল এলাকায় নদীর পানি ব্যবহারের মাধ্যমে ধানের আবাদ বাড়ানো সম্ভব। ধানের এই চাষাবাদ বাড়িয়ে ক্রমবর্ধমান খাদ্য চাহিদা পূরণ করেও ২০৫০ সালে ৪৮ লক্ষ টন উদ্বৃত্ত খাদ্য উৎপাদন করা সম্ভব।

কৃষিতে বেসরকারি খাতের অবদান অনেক উল্লেখ করে এসিআইএ এগ্রিকালচার এর প্রধান নির্বাহী এফ এইচ আনসারী বলেন, বেসরকারি খাত কৃষির উন্নয়নে সরকারকে সহযোগিতা করছে।

এখন ৯৫ ভাগ হাইব্রিড ধানের বীজ, ৯৬ ভাগ সবজি বীজ, ৯৯ ভাগ পাট বীজ প্রাইভেট সেক্টর সরবরাহ করে। বাংলাদেশের কৃষি পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে সারাবিশ্বে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন এফএ বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর রবার্ট ডি সিম্পসন, ইউএসএআইডির মিশন ডিরেক্টর ক্যাথরিন ডেবিস প্রমুখ।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.