চেম্বারে আটকে গেলেন রাজারবাগ পীর, সম্পদের তদন্ত চলবে

রাজারবাগ দরবার শরিফের পীর দিল্লুর রহমান ও তার প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্পত্তি নির্ণয় করে সেসবের উৎস সম্পর্কে জানাতে হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশ বহাল রেখেছেন চেম্বার আদালত।

সোমবার (১১ অক্টোবর) এ বিষয়ে রাজারবাগের পীর দিল্লুর রহমানের করা এক আবেদনের শুনানি করে চেম্বার বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের আদালত আদেশ দেন।

আদেশের বিষয়টি জানিয়েছেন রিটকারীদের আইনজীবী মোহাম্মাদ শিশির মনির। আদালতে পীরের পক্ষে ছিলেন জহিরুল ইসলাম মুকুল। অপরদিকে রিটকারীদের পক্ষে ছিলেন মোহাম্মাদ শিশির মনির।

এর আগে গত ৫ অক্টোবর পীর দিল্লুর রহমান ও তার প্রতিষ্ঠানগুলোর যেসব সম্পত্তি রয়েছে তা নির্ণয় করে তার উৎস সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে আদালতকে জানানোর লিখিত আদেশ প্রকাশিত হয়। এতে সম্পদের পাশাপাশি পীর ও তার পৃষ্ঠপোষকতায় উলামা আঞ্জুমান বাইয়্যিনাত অথবা ভিন্ন কোনো নামে কোনো জঙ্গি সংগঠন আছে কি না সে বিষয়ে খোঁজ নিয়ে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

রাজারবাগ দরবার শরীফের মুরিদদের দ্বারা গায়েবি মামলার শিকার ভুক্তভোগীরা ১৬ সেপ্টেম্বর রিট করেন। রিটকারীদের মধ্যে শিশু, মহিলা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, মাদ্রাসার শিক্ষক ও ব্যবসায়ী রয়েছেন। তাদের প্রত্যেকে রাজারবাগ দরবার শরীফের পীর ও তাদের মুরিদদের হয়রানিমূলক মামলার শিকার। মুরিদদের দিয়ে ৫৫ বছর বয়সী একরামুল হাসানের বিরুদ্ধে ৪৯টি মামলা করেন পীর দিল্লুর রহমান। এর মধ্যে ধর্ষণ, মারধর, চুরি, মানব পাচারসহ নানা অভিযোগে ১৩টি জেলায় করা ২০টি মামলায় ১ হাজার ৪৬৫ দিন কারাভোগ করেন একরামুল আহসান।

জামিনে বেরিয়ে গত ৭ জুন মিথ্যা উল্লেখ করে মামলা দায়েরে সম্পৃক্ত বা বাদীকে খুঁজে বের করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করলে সিআইডিকে তদন্ত করার নির্দেশ দেন। রিপোর্টে একরামুল আহসান নামের ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় করা মামলার নেপথ্যে পীর ও তার অনুসারীদের জড়িত থাকার তথ্য উঠে আসে সিআইডির ওই প্রতিবেদনে। নির্দেশনা অনুযায়ী সিআইডি অনুসন্ধান প্রতিবেদন দিলে গত ৬ সেপ্টেম্বর সেটি আদালতে উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদনে শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা একরামুল আহসান কাঞ্চনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, নারী নির্যাতনসহ নানা অভিযোগে ৪৯টি মামলার পেছনে রাজারবাগের পীর দিল্লুর রহমানের সম্পৃক্ততা উঠে আসে।

রিপোর্ট দেখে আদালতের বিস্ময় প্রকাশ করার পর রাজারবাগ দরবার শরীফের সম্পদের তথ্য চেয়ে নির্দেশনা চান রিটকারীরা। রিট আবেদনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যৈষ্ঠ সচিব ও আইজিপিসহ মোট ২০ জনকে বিবাদী করা হয়।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.