ছয় ছাত্রের চুল কেটে দেওয়া মাদ্রাসাশিক্ষক কারাগারে

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ছয় ছাত্রের চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় সেই মাদ্রাসাশিক্ষক মঞ্জুরুল কবির মঞ্জুকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শিক্ষক মঞ্জুকে উপজেলার বামনী ইউনিয়নের কাজিরদিঘীর পাড় এলাকা থেকে পুলিশ আটক করে।

আজ শনিবার (০৯ অক্টোবর) বিকেলে তাকে লক্ষ্মীপুর আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে শুক্রবার রাতে মাদ্রাসাছাত্র শাহাদাত হোসেনের মা শাহেদা বেগম বাদী হয়ে শিশু নির্যাতন দমন আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

মঞ্জু হামছাদী কাজিরদিঘীরপাড় আলিম মাদরাসার সহকারী শিক্ষক ও বামনী ইউনিয়ন জামায়াতের আমির।

লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) পলাশ কান্তি নাথ বলেন, মাদ্রাসার দাখিল শ্রেণির বেশ কয়েকজন ছাত্রের চুল লম্বা থাকার কারণে তাদের সতর্ক করা হয়েছিল চুল কেটে আসার জন্য। তবে, তারা চুল না কেটে আসার কারণে যে একজন শিক্ষক আরও কয়েকজন শিক্ষকের সহযোগিতায় ছয়-সাত ছাত্রের চুল জোরপূর্বক কেটে দিয়েছেন বলে একটি বিষয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। জানতে পেরে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিই। সেই সহকারী শিক্ষককে আমরা আমাদের হেফাজতে নিয়ে আসি। এরপর এক ছাত্রের মা বাদী হয়ে শিশু আইনে মামলা করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্ত চলছে। ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তদন্ত করে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

ঘটনার শিকার শিক্ষার্থীরা জানায়, তারা গত বুধবার শ্রেণিকক্ষে পাঠ্য কার্যক্রমে অংশ নেয়। একপর্যায়ে শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির দাখিলের ছয় ছাত্রকে শ্রেণিকক্ষের সামনের বারান্দা আসতে বলেন। এ সময় তিনি উত্তেজিত হয়ে একটি কাঁচি এনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানো সবার মাথার টুপি সরিয়ে সামনের অংশের চুল এলোমেলোভাবে কেটে দেন।

পরে শিক্ষার্থীরা লজ্জায় ক্লাস না করেই বেরিয়ে যায়। এ ঘটনার এক মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে কয়েকজন ছাত্রকে কাঁদতে দেখা গেছে।

এর আগে ২৬ সেপ্টেম্বর সিরাজগঞ্জ রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় হয়। অপমান সইতে না পেরে শিক্ষার্থী নাজমুল হোসেন তুহিন ছাত্রাবাসে গিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটির রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.