ভাসানচরে রোহিঙ্গা: জাতিংঘের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে জাতিসংঘের সংস্থাগুলোকে সম্পৃক্ত করতে শনিবার সরকার ও জাতিসংঘ একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন এবং জাতিসংঘের পক্ষে বাংলাদেশে জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি ইয়োহানেস ফন দের ক্লাউ এমওইউতে সই করেন।

শনিবার (৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে এ সমঝোতা স্মারক অনুষ্ঠিত হয়। এতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন এবি তাজুল ইসলাম বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. মোহসীন বলেন, ‘বেসামরিক প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ভাসানচরে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালিত হবে। বাংলাদেশ সরকার ও ইউএনএইচসিআর-এর যৌথ উদ্যোগে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের (এফডিএমএন) খাদ্য ও পুষ্টি, সুপেয় পানি, পয়ঃনিস্কাশন, চিকিৎসা, মিয়ানমার কারিকুলাম ও ভাষায় এফডিএমএনদের অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা এবং জীবিকায়নের ব্যবস্থা করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার এখানে বসবাসরত রোহিঙ্গা ও কর্মরত জাতিসংঘ এবং এর সহযোগী সংস্থা ও দেশীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিও কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয় দেখভাল করবে। এছাড়া ভাসানচরে এফডিএমএনদের বসবাসের কারণে পাশ্ববর্তী স্থানীয় এলাকা ও জনগণের ওপর যে প্রভাব পড়বে, তা নিরসনে জাতিসংঘের সংস্থাগুলো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, জাতিসংঘের সংস্থাগুলো কক্সবাজারের ন্যায় ভাসানচরেও মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখবে। বেসামরিক প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে এখানে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

বাংলাদেশ সরকার ও ইউএনএইচসিআরে যৌথ উদ্যোগে রোহিঙ্গাদের খাদ্য ও পুষ্টি, সুপেয় পানি, পয়ঃনিস্কাশন, চিকিৎসা, মিয়ানমার কারিকুলাম ও ভাষায় অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা এবং জীবিকায়নের ব্যবস্থা করা হবে। বাংলাদেশ সরকার এখানে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের ও কর্মরত জাতিসংঘ এবং এর সহযোগী সংস্থা ও দেশীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিও কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয় দেখাশুনা করবে। এছাড়া ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের বসবাসের কারণে পার্শ্ববর্তী স্থানীয় এলাকা ও জনগণের ওপর যদি প্রভাব পড়ে তা নিরসনে জাতিসংঘের সংস্থাগুলো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

ইউএনএইচসিআর এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এই সমঝোতা স্মারকের মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসন না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের সরকারের ও জনগণের উদারতা ও সহায়তা আবারও প্রতিফলিত হয়। পাশাপাশি এদেশে আশ্রিত প্রায় নয় লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর মানবিক সহায়তায় বাংলাদেশের নেতৃত্বের জন্য জাতিসংঘের সহায়তা চালু রাখার প্রত্যয়ও আরেক বার ফুটে ওঠেছে। এদেশে অবস্থিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আকাঙ্ক্ষা নিরাপদে, স্বেচ্ছায়, মর্যাদার সঙ্গে ও টেকসইভাবে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া। জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ সরকার সেই অগ্রাধিকার নিয়েই কাজ করছে; আর এটি যতদিন সম্ভব না হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত এই সহায়তা চলমান থাকবে।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

 

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.