রেকর্ড রাজস্ব আদায় হলেও লক্ষ্যমাত্রা থেকে পিছিয়ে এনবিআর

কোভিড-১৯ এর প্রভাব কাটিয়ে আবার সচল হচ্ছে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। ফলে বাড়ছে রাজস্ব আদায়ের হারও। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) রেকর্ড পরিমাণ রাজস্ব আদায় করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এসময়ে রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪ শমিক ৫৫ শতাংশ। রাজস্ব আদায়ের এই রেকর্ডের পরও জাতীয় বাজেটের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় পিছিয়ে আছে প্রতিষ্ঠানটি।

এনবিআরের সাময়িক হিসাব অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরের দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) আয়কর থেকে ১০ হাজার ২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা আদায় করা সম্ভব হয়েছে। ভ্যাট থেকে এসেছে ১২ হাজার ৯৬৪ কোটি ৩ লাখ টাকা এবং শুল্ক খাত থেকে প্রতিষ্ঠানটি আদায় করেছে ১১ হাজার ৫৮১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে তিন খাতে মোট আদায় ৩৪ হাজার ৫৪৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। প্রবৃদ্ধি ১৪ শমিক ৫৫ শতাংশ। যেখানে গত অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট মাসে ৩০ হাজার ১৬০ কোটি ৬৪ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছিল। রাজস্ব আদায়ে এই রেকর্ডের পরও লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৫ হাজার ২১০ কোটি টাকা পিছিয়ে আছে প্রতিষ্ঠানটি। এ সময় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৯ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা।

এনবিআরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, করোনার ধকল কাটিয়ে বর্তমানে মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরেছে। আমদানি-রফতানি থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে মানুষের অংশগ্রহণ বাড়ছে। এর ফলে রাজস্ব আদায়ও বাড়ছে। তারা বলেন, গত এক দশকে এক মাসের হিসাবে এত প্রবৃদ্ধি হয়নি।

এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরের দ্বিতীয় মাসে (আগস্ট) আশান্বিত সাফল্য পেয়েছে রাজস্ব আদায়ের তিনটি খাতে। আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক খাতে প্রতিষ্ঠানটির আদায় হয়েছে যথাক্রমে ৫ হাজার ২৭০ কোটি ৮৪ লাখ, ৭ হাজার ২৬৭ কোটি ৩১ লাখ এবং ৬ হাজার ৬৫৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তিন খাতে আগস্ট মাসে মোট আদায় ১৯ হাজার ১৯৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এসময়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ।

অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও শুল্ক বিভাগ মিলিয়ে মোট ঘাটতি ছিল ৭ হাজার ২২৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। তবে দ্বিতীয় মাসে এসে রাজস্ব আদায়ে ২৪ শমিক ৫৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। ফলে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ঘাটতি কমে দাড়িয়েছে ৫ হাজার ২১০ কোটি টাকা।

প্রসঙ্গত, চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। সবচেয়ে বেশি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট থেকে এক লাখ ২৮ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা, আয়কর ও ভ্রমণ কর থেকে পাওয়ার আশা এক লাখ ৫ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা এবং আমদানি শুল্ক থেকে পাওয়ার আশা ৯৫ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা।

অর্থসূচক/এমএস/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.