ফেসবুক-বিভ্রাটে ৬ ঘণ্টায় ৬০০ কোটি ডলার হারালেন জাকারবার্গ

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক মাত্র কয়েক ঘণ্টা বন্ধ থাকায় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গের ব্যক্তিগত সম্পদ এক ধাক্কায় ৬০০ কোটি ডলারেরও বেশি কমে গেছে। এ কারণে তিনি পিছিয়ে পড়েছেন বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকাতেও।

সোমবার (০৪ অক্টোবর) রাত থেকে এসব যোগাযোগের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী সমস্যা দেখা দেয়। ওয়েবসাইট বা স্মার্টফোন কোনও ডিভাইস দিয়েই এই মাধ্যমগুলোতে প্রবেশ করা যাচ্ছিল না। ডাউনডিটেক্টার নামে যে প্রযুক্তি দিয়ে এই মাধ্যমগুলোর ব্যবহার ট্র্যাক করা যায়, তারা জানিয়েছে, তাদের দেখা এটাই সবচেয়ে বড় বিভ্রাট। বিশ্বব্যাপী এক কোটি ৬০ লাখ ব্যবহারকারী সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার রিপোর্ট করেছেন।

টেক জায়ান্টটির প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা মাইক শ্রোফার এমন বিড়ম্বনার জন্য ব্যবহারকারীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।

জাকারবার্গ নিজেও এক ফেসবুক পোস্টে ক্ষমা চেয়ে লিখেছেন, ‘ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ ও মেসেঞ্জার অনলাইনে ফিরে আসছে। এই সমস্যার জন্য দুঃখিত। আমি জানি পছন্দের মানুষের সঙ্গে যুক্ত থাকতে আমাদের সেবার ওপর আপনারা কতটা নির্ভর করেন।’

ইয়াহু ফাইন্যান্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্য সেপ্টেম্বর থেকেই ফেসবুকের শেয়ারের দর ১৫ শতাংশের মতো কম। গতকালের ঘটনায় তা আরও ৪ দশমিক ৯ শতাংশ কমে গেছে। আর শেয়ারের দর কমায় মার্ক জাকারবার্গের নিট সম্পদের পরিমাণ কমে ১২ হাজার ১৬০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে।

এদিকে সম্পদের পরিমাণ কমায় ব্লমবার্গ বিলিয়নিয়ার সূচকে জাকারবার্গ এখন মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের পেছনে। আজ সকালের তালিকায় জাকারবার্গ আছেন পাঁচ নম্বরে, এক ধাপ এগিয়ে বিল গেটস রয়েছেন চারে। সূচকটির তথ্য অনুযায়ী, মাত্র কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে জাকারবার্গের সম্পদ ১৪ হাজার কোটি ডলার থেকে এতটা কমে গেল।

গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ফেসবুকের অভ্যন্তরীণ নথির সূত্র ধরে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করতে শুরু করে প্রভাবশালী মার্কিন দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। সেখানে বলা হয়, ফেসবুকের সেবাগুলো ব্যবহারকারীর জন্য ক্ষতিকর জেনেও প্রতিষ্ঠানটি কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ইনস্টাগ্রাম কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলের ঘটনায় ফেসবুকের পরোক্ষ মদদ ছিল। এ ব্যাপারগুলো ফেসবুক ভালো করেই জানত।

এই তথ্যগুলো সংবাদমাধ্যমে ফাঁস করেন ফেসবুকের সাবেক কর্মী ফ্রান্সেস হাউগেন। গতকাল প্রথমবারের মতো তিনি সামনে আসেন।

প্রতিবেদনগুলোর জবাবে ফেসবুক বলেছে, ফেসবুকের পণ্যগুলো নিয়ে যেসব সমস্যার কথা বলা হচ্ছে, তা বেশ জটিল। এর পেছনে কেবল প্রযুক্তি একা দায়ী নয়।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.