ফরিদপুরের সেই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ

অর্থ পাচারের মামলায় ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ফরিদপুর প্রেসক্লাবের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেলসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) গ্রহণ করেছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন।

একই সঙ্গে পলাতক থাকায় খন্দকার মোহতেসাম হোসেন বাবর, এএইচএম ফুয়াদ, ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ওরফে ফাহিম, কামরুল হাসান ডেভিড, মুহাম্মদ আলি মিনার ও তারিকুল ইসলাম ওরফে নাসিমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। গ্রেফতার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ১৩ অক্টোবর দিন ধার্য করেন আদালত।

এর আগে গত ৩ মার্চ ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেলসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে এ চার্জশিট দাখিল করেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার উত্তম কুমার বিশ্বাস।

দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ বাদী হয়ে গত ২৬ জুন ঢাকার কাফরুল থানায় অর্থ পাচারের অভিযোগ এনে এই মামলা করেন। মামলায় ওই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবৈধ উপায়ে উপার্জন ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়।

এজাহারে বলা হয়, ২০১০ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত ফরিদপুরের এলজিইডি, বিআরটিএ, সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি বিভাগের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন সাজ্জাদ ও ইমতিয়াজ।

এ ছাড়া মাদক ব্যবসা ও ভূমি দখল করে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। এসি, নন–এসিসহ ২৩টি বাস, ড্রাম ট্রাক, বোল্ডার, পাজেরো গাড়ির মালিক হয়েছেন। টাকার উল্লেখযোগ্য অংশ হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেন তারা।

এজাহারে আরও বলা হয়, প্রথম জীবনে এই দুই ভাই রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে এক বিএনপি নেতার ফাইফরমাশ খাটতেন। তখন তাদের সম্পদ বলতে তেমন কিছুই ছিল না।

এজাহারে আরও বলা হয়, গত ১৮ জুন তিনি (এস এম মিরাজ) এ বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত হয়ে তদন্ত শুরু করেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই দুই ভাই অন্তত দুই হাজার কোটি টাকার বেশি সম্পদ অবৈধ উপায়ে উপার্জন করেছেন।

২০২০ সালের ১৬ মে রাতে শহরের গোয়ালচামট এলাকার মোল্লাবাড়ি এলাকায় অবস্থিত আওয়ামী লীগ সভাপতি সুবল সাহার যমুনা ভবন নামের বাড়িতে দুই দফা হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা ইট মেরে বাড়ির কাঁচের ক্ষতি সাধন করে। এ ব্যাপারে সুবল চন্দ্র সাহা নিজে বাদী হয়ে ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পর ১৮ জুন রাতে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে এ মামলাটি করেন।

ওই মামলার সূত্রধরে ওই বছর ৭ জুন রাতে বিশেষ অভিযানে শহরের বদরপুর এলাকায় অবস্থিত ফরিদপুর-৩ আসনের সাংসদ ও সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বাড়ি আফসানা মঞ্জিল এবং তার আশেপাশের এলাকাসহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে নয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এদের মধ্যে ছিলেন খন্দকার মোশাররফ হোসেনের আস্থাভাজন ও ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ফরিদপুরের আলোচিত দুইভাই শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেল।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.