তুই আমার সুখের সংসার শেষ করেছিস…

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার চতুর্থ দফার প্রথম দিনে ৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। এনিয়ে এ পর্যন্ত মামলার ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী, কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম জানিয়েছেন, চতুর্থ দফা সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিনের শুরুতে ১৫, ১৬ ও ১৭ তম সাক্ষী যথাক্রমে ছেনুয়ারা বেগম, হাম জালাল ও সালেহ আহম্মেদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

পরে ২নং আসামি বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশের পক্ষে আইনজীবী এডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত প্রদত্ত সাক্ষ্যের উপর দীর্ঘ সময় জেরা করেন। সকালে সালেহ আহম্মেদ ও আলী আকবরসহ ৪ জন সাক্ষীর হাজিরা দেন রাষ্ট্রপক্ষ। দুপুরে প্রায় ১ ঘণ্টা বিরতির পর আদালতে বিচারের কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়।

১৫তম সাক্ষী ছেনুয়ারা বেগম ওসি প্রদীপের দিকে আঙুল উঁচিয়ে চিৎকার করে বলেন- তুই আমার সুখের সংসার শেষ করেছিস।

ছেনুয়ারার স্বামী জলিলকে গুম করে রেখেছিলেন টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। তারপর কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে হত্যার পর জলিলের লাশ পাওয়া গিয়েছিল।

উল্লেখ্য, গত বছর ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।

এ ঘটনায় গত বছর ৫ আগস্ট সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় লিয়াকত আলীকে।

২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও র‍্যাব-১৫ কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম।

আসামিদের মধ্যে পুলিশের ৯ জন সদস্য রয়েছেন। তারা হলেন- বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী, কনস্টেবল রুবেল শর্মা, এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুল করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া ও কনস্টেবল সাগর দেব নাথ।

অপর আসামিরা হলেন- আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্য এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজিব ও মো. আব্দুল্লাহ এবং টেকনাফের বাহারছড়ার মারিষবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও পুলিশের করা মামলার সাক্ষী নুরুল আমিন, মো. নিজাম উদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.