শিক্ষার্থীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করতো সাগর

স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কৌশলে ধর্ষণ করতেন মো. সাগর মিজি (২৪)। গত ২১ সেপ্টেম্বর এক নারীকে (২৬) কক্সবাজারের আমারী রিসোর্টে নিয়ে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে মাথায় আঘাত করে হত্যা করেন সাগর।

এরপর ঘটনাস্থল থেকে তিনি পালিয়ে যান। কক্সবাজার থেকে পালিয়ে আসার চারদিন পর র‌্যাব তাকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে।

আজ শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে র‌্যাব-১০ এর একটি দল রাজধানীর সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড টোলপ্লাজা এলাকা থেকে সাগর মিজিকে গ্রেফতার করে। এ সময় তার কাছ থেকে ভিকটিমের মোবাইলসহ তিনটি মোবাইল ও নগদ ১৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

পরে বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক (সিও) ডিআইজি মো. মাহফুজুর রহমান এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, একাধিক নারীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধ্য করেন সাগর মিজি। গ্রেফতার সাগর গত ১৮ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে কক্সবাজার কলাতলী এলাকার আমারী রিসোর্টের ১০৮ নম্বর রুম ভাড়া নেন। ভাড়া নেওয়ার পর হোটেল কর্তৃপক্ষকে জানান, ২০ সেপ্টেম্বর তার স্ত্রী ঢাকা থেকে আসবেন। তখন তাকে অন্য একটি ডাবল রুম দিতে হবে। সেই মোতাবেক ২০ সেপ্টেম্বর সাগর তার স্ত্রীর পরিচয়ে এক নারীকে (২৬) আমারী রিসোর্টে নিয়ে এসে ৪০৮ নম্বর রুমে ওঠেন। পরবর্তীতে ২১ সেপ্টেম্বর ১০টার দিকে হোটেল কর্তৃপক্ষ ওই কক্ষে কোনো সাড়া-শব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙে ওই নারীর মরদেহ দেখে পুলিশকে খবর দেয়।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠায়।

গ্রেফতার সাগরের দেওয়া তথ্যমতে, পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে নিহত নারীকে স্ত্রী পরিচয়ে কক্সবাজারের আমারী রিসোর্টে নিয়ে যান। রিসোর্টের ওই কক্ষে নিয়ে ভিকটিমকে ধর্ষণ করার একপর্যায়ে সাগরের সঙ্গে ভিকটিমের ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় সাগর ভিকটিমের গলা চেপে ধরে দেওয়ালের সঙ্গে ধাক্কা দিলে ভিক্টিম নারী মেঝেতে পড়ে যান। ভিক্টিমকে আবার শ্বাসরোধ করে পাশে থাকা গ্লাস দিয়ে দুই-তিনবার মাথায় আঘাত করে হত্যা করেন। এরপর সাগর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।

সাগরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‌্যাব -১০ এর অধিনায়ক জানান, সাগর ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করতেন। তিনি বিভিন্ন এলাকায় একাধিক নারীকে মিথ্যা প্রেমের ফাঁদে ফেলে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধ্য করতেন। তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

এক প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি মাহফুজুর রহমান বলেন, সাগরের মোবাইল চেক করে এ পর্যন্ত ১০ থেকে ১২ জন শিক্ষার্থীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে কৌশলে ধর্ষণের তথ্য পাওয়া গেছে। তবে এ পর্যন্ত হত্যা করেছেন একজনকেই।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.