ভিন্ন ধর্মাবলম্বীর প্রেম, দুটি মৃত্যু, প্রেমিক গ্রেফতার

ফেনীর আলোচিত আল-আমিন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মো. ডায়মন্ড নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে দিনাজপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সিআইডি জানায়, একটি প্রেমের সম্পর্ক থেকেই এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের সূত্রপাত।

মো. ডায়মন্ডের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল নওগাঁর মান্দা উপজেলার কিশোরী পপি মণ্ডলের (১৫)। প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ায় কিছুদিন পর বিষ পানে আত্মহত্যা করে পপি। তবে এই সম্পর্ক ভাঙনের পেছনে হাত ছিল ডায়মন্ডের বন্ধু আল আমিনের। মূলত প্রেমের সম্পর্কে ভাঙন ধরানোয় প্রেমিকার আত্মহত্যার প্রতিশোধ নিতেই আল আমিনকে খুন করেন ডায়মন্ড।

আজ বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুক্তা ধর।

সংবাদ সম্মেলনে মুক্তা ধর আজ বলেন, কিশোরীর মৃত্যুর ঘটনায় নওগাঁয় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছিল। আর ডায়মন্ডকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন আল আমিনের চাচা। ডায়মন্ড পুলিশকে বলেছে, আল আমিনসহ কয়েক তরুণ ওই কিশোরীকে যৌন হয়রানিও করেছিল। এখন অপমৃত্যুর এই মামলাটি নতুনভাবে তদন্তের সিদ্ধান্ত হয়েছে। আল আমিনের সঙ্গে আরও যারা ছিলেন তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

মৃত কিশোরী, ডায়মন্ড, আল আমিন, আল আমিনের বড় ভাই তোফাজ্জল হোসেন সবাই নওগাঁর মান্দা এলাকার বাসিন্দা। তবে কাজের সূত্রে খুদে ব্যবসায়ী ডায়মন্ড, আল আমিন ও তফাজ্জল ফেনীর পশ্চিম বিজয়সিংহ লুদ্দারপাড় গ্রামের ফরিদ মিয়ার টিনশেড কলোনিতে থাকতেন। মাস দেড়েক বা দু-এক মাস পরপর নওগাঁয় যেতেন।

পুলিশ জানতে পেরেছে, কিশোরীর সঙ্গে ডায়মন্ডের প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে গেলে সে বিষ পান করে আত্মহত্যা করে। পরে কথায় কথায় আল আমিন জানান, তিনি প্রায়ই ডায়মন্ডের ফোন থেকে ওই কিশোরীকে ফোন করতেন। তিনিই জানিয়েছেন ডায়মন্ড তাকে আর ভালোবাসে না। সে কারণে কিশোরী আত্মহত্যা করেছে।

ডায়মন্ডকে আল আমিন আরও জানান, রুবেল মন্ডল (২২), হাসিবুর রহমান (২৩), আবু বক্কর (২৩) এবং তিনি কিছুদিন আগে রাতের বেলায় কিশোরীকে যৌন হয়রানিও করেছেন।

এসব খবর জানান পর থেকে ডায়মন্ড আল আমিনকে খুনের পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী গত ৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে তিনি আল আমিনের বুকে ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকেন। এ সময় আল আমিনকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে আল-আমিনের বড় ভাই তোফাজ্জলকেও ডায়মন্ড ছুরিকাঘাত করেন। আল আমিন মারা যান। তাদের চিৎকারে কলোনির অন্য বাসিন্দারা এগিয়ে এলে ডায়মন্ড দৌড়ে পালিয়ে যান।

মুক্তা ধর আরও বলেন, ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হলে সিআইডির এলআইসি শাখা ছায়া তদন্ত শুরু করে। অবশেষে দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া এলাকা থেকে মঙ্গলবার রাতে আসামি ডায়মন্ডকে গ্রেফতার করা হয়।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.