বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে টিফা চুক্তি স্বাক্ষর

দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত কাঠামোগত সমঝোতা (টিফা) চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া। গত পাঁচ দশকের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশের প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক অর্থনৈতিক কাঠামো এই টিফা চুক্তি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের নতুন সুযোগ উন্মোচনের একটি প্ল্যাটফর্ম হিসাবে কাজ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্য, পর্যটন ও বিনিয়োগমন্ত্রী ড্যান তেহান আজ বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) এক ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে চুক্তিটি স্বাক্ষর করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

টিফা চুক্তির অধীনে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হবে যাতে দুই দেশের সংশ্লিষ্ট সেক্টর ও সাব-সেক্টরের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব থাকবে এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পূর্ণ সম্ভাবনা অর্জন করার জন্য আলোচনা এগিয়ে নিতে মুখ্য ভূমিকা রাখবে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমি অত্যন্ত খুশি যে, বাংলাদেশ এমন একটি সময় অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে টিফা স্বাক্ষর করলো যখন বাংলাদেশ তার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করবো, এই ফ্রেমওয়ার্ক বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণ পরবর্তী সময়ে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা ধরে রাখা, বাণিজ্য উদারীকরণ এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের প্রবাহ বৃদ্ধির অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিসহ সকল প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে কাজ করবে।

অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্য, পর্যটন ও বিনিয়োগ মন্ত্রী ড্যান তেহান বলেন, অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রসার এবং তা অধিকতর গতিশীল করতে কাজ করে যাচ্ছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এই ধরনের অর্থনৈতিক কাঠামোর মধ্য দিয়ে উভয় দেশে কর্মসংস্থান ও বাণিজ্যের সুযোগ সৃষ্টিতে আরো অবদান রাখতে পারবো।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান শিক্ষা, কারিগরি প্রশিক্ষণ এবং জ্বালানি চাহিদা পূরণে অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতা করার সুযোগ রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার বহাল রাখার বিষয়ে আশ্বাস দেন তিনি।

বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য গত দশকে প্রায় ছয় গুণ বেড়ে গত বছরে ২.৬ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারে পৌঁছেছে। আইনগত বাধ্যবাধকতা না থাকলেও টিফা উভয় দেশ থেকে নতুন পণ্যের বাণিজ্যিক ক্ষেত্র সৃষ্টি এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহজ করতে সহায়তা করবে। টিফা কাঠামোর মাধ্যমে তৈরি পোশাক, কৃষিপণ্য, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, তথ্য ও প্রযুক্তি, দক্ষতা উন্নয়ন ও শিক্ষা সেবা ছাড়াও উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে সব ধরনের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনার সুযোগ থাকবে। এই টিফার আওতায় অস্ট্রেলিয়া যৌথ ওয়ার্কিংগ্রুপের উদ্বোধনী সভা ২০২২ সালের প্রারম্ভে আয়োজনের প্রস্তাব করেছে।

অনুষ্ঠানে অস্ট্রেলিয়াস্থ বাংলাদেশের হাইকমিশনার সফিউর রহমান এবং বাংলাদেশস্থ অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার জেরিমিব্রুয়ার বক্তব্য রাখেন।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.