চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী

আপাতত সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

তিনি বলেন, তবে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির জন্য বিসিএস বাদে যেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বিভিন্ন ক্যাটাগরির সরকারি চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারেনি, সেসব প্রতিষ্ঠানকে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকাশিতব্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীদের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ২৫ মার্চ ২০২০ তারিখ নির্ধারণ করার অনুরোধ করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) একাদশ জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনের টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে বগুড়া-৪ আসনের বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেনের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।

এর আগে বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে মুলতবি অধিবেশন শুরু হয়।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগে বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বড় ধরনের সেশনজট থাকলেও বর্তমানে তা নেই। যাতে শিক্ষার্থীরা সাধারণত ১৬ বছরে এসএসসি, ১৮ বছরে এইচএসসি এবং ২৩/২৪ বছর বয়সে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে থাকেন। চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ থাকায় স্নাতকোত্তরের পরেও ৬ থেকে ৭ বছর সময় পেয়ে থাকেন চাকরি প্রার্থীরা। এ ছাড়াও ৩০ বছর বয়সসীমার মধ্যে একজন প্রার্থী চাকরির আবেদন করলে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হতে দুই এক বছর সময় লাগলেও তা গণনা করা হয় না।

ফরহাদ হোসেন বলেন, সম্প্রতি চাকরি থেকে অবসরের বয়সসীমা ৫৭ থেকে বাড়িয়ে ৫৯ করায় শূন্য পদের সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই হ্রাস পেয়েছে। এক্ষেত্রে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো হলে বিভিন্ন পদের বিপরীতে চাকরিপ্রার্থীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়বে। এতে নিয়োগের ক্ষেত্রে অনেক প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হতে পারে। এতে করে যাদের বয়স ৩০ বছরের বেশি তারা চাকরিতে আবেদনের সুযোগ পেলেও অনূর্ধ্ব ৩০ বছরের প্রার্থীদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি হতে পারে।

এসব কারণে সরকারের চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর পরিকল্পনা সরকারের নেই বলে জানান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী। তিনি জানান, সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও এর অধীনে অধিদফতর/পরিদফতর/দফতর এবং সংবিধিবদ্ধ/ স্বায়ত্তশাসিত/জাতীয়করণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে করোনার পরিস্থিতির কারণে বিভিন্ন ক্যাটাগরির সরকারি চাকরিতে (বিসিএস ছাড়া) সরাসরি নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারেনি সে সব প্রতিষ্ঠানকে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকাশিতব্য বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীদের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ২৫ মার্চ, ২০২০ তারিখ নির্ধারণপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়/বিভাগকে অনুরোধ করা হয়েছে।

দেশে বর্তমানে ১৭০ জন কর্মকর্তা চুক্তিভিত্তিক কর্মরত আছে বলে জানান ফরহাদ হোসেন। তিনি বলেন, অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক, প্রকৌশলী, বিজ্ঞানী, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, জনপ্রশাসনের কর্মকর্তা এবং জনসাধারণের মধ্যে বিশেষ যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ আছেন।

ভোলা-২ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন কোনো পদে সরাসরি নিয়োগের সুপারিশ করে না। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগের রিকুইজিশনে বিভিন্ন পদে নিয়োগের সুপারিশ করে থাকে। ২৮তম থেকে ৩৯তম বিএসএস পরীক্ষায় ৩৫ হাজার ৬০৩ জন প্রার্থীকে ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছে পিএসসি।

একই সময়ে নন-ক্যাডারে প্রথম শ্রেণির পদে ৫ হাজার ১৪৩ জন এবং দ্বিতীয় শ্রেণির (১০,১১ ও ১২তম গ্রেডে) পাঁচ হাজার ৭৪৩ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানান জন প্রশাসন প্রতিমন্ত্রী।

প্রতিমন্ত্রী জানান, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে পিএসসি ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ৯ম ও তদূর্ধ্ব গ্রেডে চার হাজার ২৮৫ জনকে এবং দ্বিতীয় শ্রেণির (১০,১১ ও ১২তম গ্রেড) বিভিন্ন নন-ক্যাডার পদে ৩২ হাজার ৭৬৫ জন প্রার্থীকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.