খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে আইন মন্ত্রণালয়ের মত

দুর্নীতির দুই মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর বিষয়ে মতামত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।

রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তার (খালেদা জিয়া) দণ্ড স্থগিতের বিষয়ে আবেদন আমাদের (আইন মন্ত্রণালয়) কাছে এসেছিল। আমরা তার দণ্ড আরও ছয় মাস স্থগিতের বিষয়ে মতামত দিয়ে প্রস্তাবটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। সে মতামতে আগের মতোই তিনি (খালেদা জিয়া) বিদেশে যেতে পারবেন না এবং বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিতে হবে বলে দুটি শর্তও দেওয়া হয়েছে। গত ৮ সেপ্টেম্বর মতামত দেওয়া হলেও তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়নি। কারণ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কিছু কর্মকর্তা দেশের বাইরে আছেন।’

গত মাসে খালেদা জিয়ার স্বজনরা সাজা স্থগিত ও মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেই আবেদনের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে আইন মন্ত্রণালয় খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত ও মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছে।

এর আগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন পুরান ঢাকার বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায় ঘোষণার পর খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। এরপর এ মামলার আপিলে তার সাজা পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট।

এছাড়াও ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায়ে সাত বছরের কারাদণ্ড ছাড়াও খালেদা জিয়াকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।

এরপর কারান্তরীণ অবস্থায়ই ২০১৮ সালের ৬ অক্টোবর ও ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে নেওয়া হয় খালেদা জিয়াকে। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা শেষে তাকে আবারও কারাগারে পাঠানো হয়। এভাবে কয়েক দফায় তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে এবং হাসপাতাল থেকে কারাগারে নেওয়া হয়। তবে এরই মাঝে দেশে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করলে খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে তার পরিবার সরকারের কাছে আবেদন জানায়। পরে ফৌজদারি কার্যবিধির (সিআরপিসি) ৪০১(১) ধারা অনুযায়ী কারাদণ্ড স্থগিত করে সরকার গত বছরের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়।

সিআরপিসির ৪০১(১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘যখন কোনো ব্যক্তিকে অপরাধের জন্য শাস্তি প্রদান করা হয়, তখন সরকার যে কোনো সময় শর্ত ছাড়াই অথবা শর্তের বিনিময়ে (দণ্ডিত ব্যক্তি গ্রহণ করে) শাস্তি কার্যকর স্থগিত করতে পারে। অথবা তাকে যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তার পুরো বা যে কোনো অংশ স্থগিত করতে পারে।’

পরবর্তীতে, খালেদার কারাদণ্ড স্থগিতের বাড়ানো হয়। সে সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, খালেদা জিয়া তার বাড়িতে চিকিৎসা সুবিধা পাবেন এবং তিনি এই সময়ের মধ্যে বিদেশে যেতে পারবেন না।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.