নেইমার জাদুতে ব্রাজিলের আটে আট

সতীর্থকে দিয়ে করালেন প্রথমে এক গোল। পরে নিজে করলেন আরও একটি। গোল-এসিস্ট করে পেরুর বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচটি পুরোপুরি নিজের করে নিলেন নেইমার। যার সুবাদে বাছাইপর্বে আট ম্যাচে টানা অষ্টম জয় তুলে নিয়েছে ব্রাজিল।

জাতীয় দলের হয়ে বরাবরই দুর্বার ব্রাজিলিয়ান সেনসেশন নেইমার জুনিয়র। আরও একবার তারই প্রমাণ দিলেন তিনি। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে পেরুর বিপক্ষে জাদুকরী পারফরম্যান্সে ২-০ গোলের জয় পেয়েছে ব্রাজিল।

অ্যারেনা পেরনামবুকোয় এই জয়ের নায়ক নেইমার। নিজে একবার লক্ষ্যভেদ করার আগে দলের প্রথম গোলটিতেও রেখেছেন অবদান। তার অ্যাসিস্ট থেকেই ব্রাজিলকে লিড এনে দিয়েছিলেন এভারতন রিবেইরো। ফলে শতভাগ জয় ধরে রেখে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের পয়েন্ট টেবিলে যথারীতি শীর্ষে ব্রাজিল। পূর্ণ ২৪ পয়েন্ট তাদের। সমান ৮ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আর্জেন্টিনা।

কোচ তিতে ও ব্রাজিলের জন্য এবার ছিল কঠিন পরীক্ষা। সেপ্টেম্বরের বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে ব্রাজিল পায়নি প্রিমিয়ার লিগে খেলা ৯ খেলোয়াড়কে। করোনা ভাইরাস ও কোয়ারেন্টিন জটিলতায় খেলোয়াড় ছাড়েনি ইংল্যান্ডের ছয় ক্লাব। এত খেলোয়াড়ের অনুপস্থিতি, বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের ছাড়া ব্রাজিলের একাদশ গড়া নিয়েই দুশ্চিন্তার মেঘ জন্মেছিল। তবে কোনও কিছুই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি সেলেসাওদের সামনে। থিয়গো সিলভা-গাব্রিয়েল জেসুস-আলিসনদের ছাড়াই জয়ের ধারা সচল রেখেছে ব্রাজিল।

প্রতিপক্ষ পেরুকে বেশিরভাগ সময় আক্রমণ ঠেকাতেই ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। সুযোগ পেয়ে মাঝেমধ্যে ব্রাজিলের রক্ষণে হানা দিলেও সুবিধা করতে পারেনি। বিপরীতে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্রাজিলের প্রথম সুযোগটা আসে দশম মিনিটে। কিন্তু গেরসনের নেওয়া শট পেরু গোলকিপারের হাতে লেগে প্রতিহত হয়।

তবে বেশিক্ষণ বাধায় দেয়াল টিকেনি সফরকারীদের। ১৪ মিনিটে স্বাগতিকদের লিড এনে দেন রিভেইরো। নেইমারের কাট ব্যাক থেকে এই উইঙ্গারের গোলমুখে নেওয়া শট পেরু গোলকিপারের হাতে লাগলেও শেষরক্ষা হয়নি। বল ঠিকই জড়িয়ে যায় জালে।

এগিয়ে যাওয়া ব্রাজিলের আক্রমণ চলতেই থাকে। তবে কখনও নেইমার, কখনও গাব্রিয়েল বারবোসা, কখনও লুকাস পাকিতা নষ্ট করেছেন সুযোগ। এরপর ৪০ মিনিটে গিয়ে গোলের দেখা পায় ব্রাজিল। এবার স্কোরশিটে নাম তোলেন নেইমার। রিবেইরোর দূর থেকে নেওয়া শট পেরুর এক খেলোয়াড় গোলের সামনে থেকে ক্লিয়ার করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বল পায়ে ঠিকমতো না লেগে চলে আসে গোলের ঠিক সামনে ফাঁকায় থাকা নেইমারের কাছে। সহজ সুযোগটা কি আর মিস হয় প্যারিস সেন্ত জার্মেই ফরোয়ার্ডের!

ওই লক্ষ্যভেদে আবার একটা রেকর্ডও গড়ে ফেলেছেন নেইমার। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে এখন সবচেয়ে বেশি গোল করা ব্রাজিলিয়ান তিনি। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে তার গোল এখন ১২। এত গোল পেলে, রোনালদো, রোনালদিনহো, রিভালদো, জিকো- কেউই করতে পারেননি।

দ্বিতীয়ার্ধে গোল বাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে গেছে ব্রাজিল। বেশ কয়েকটি ভালো সুযোগও তৈরি করেছিল তারা। কিন্তু গোলের দেখা আর পায়নি। তাই ওই ২-০ গোলের স্কোরলাইন ধরে রেখে ৩ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.