নিখোঁজের ২৩ বছর পর দেশে ফিরলেন আমেনা

প্রায় ২৩ বছর আগে বগুড়ার ধুনট উপজেলার মাজবাড়ি গ্রামের আমেনা খাতুন নিখোঁজ হন। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি স্বজনেরা। তারা ধরে নেন, আমেনা মারা গেছেন। বহু ঘটনার পর আজ সোমবার তিনি নেপাল থেকে দেশে ফিরলেন।

আমেনা খাতুন বগুড়ার ধুনট উপজেলার চিকাশি ইউনিয়নের ছোট চাপড়া গ্রামের মৃত আজগর প্রামাণিকের স্ত্রী।

আজ সোমবার (০৬ সেপ্টেম্বর) নেপালের কাঠমান্ডুতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের তত্ত্বাবধানে একটি বিশেষ বিমানে নেপাল থেকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয় আমেনা খাতুনকে।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেপালে বালাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর মাসুদ আলম আমেনা খাতুনকে তার তিন ছেলেসহ নাতিদের কাছে হস্তান্তর করেন।

এর আগে সোমবার সকালে কাঠমান্ডু ত্রিভুবন বিমান বন্দরে আমেনা খাতুনকে বিদায়ী অভ্যর্থনা জানান রাষ্ট্রদূত সালাহউদ্দিন নোমান চৌধুরী।

নেপালে বাংলাদেশ দূতাবাসের কনস্যুলার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ১ সেপ্টেম্বর একটি চিঠি পাঠান। ওই চিঠি থেকে জানা যায়, আমেনার বয়স এখন ৮০ বছর। নেপালের কাঠমান্ডু থেকে প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার দূরে সুনসারি জেলায় প্রায় তিন মাস আগে তার সন্ধান মেলে। পরে নেপালে বাংলাদেশের দূতাবাস তাকে উদ্ধার করে দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় আজ তিনি দেশের মাটি স্পর্শ করলেন।

এর আগে আমেনা খাতুনের বড় ছেলে আমজাদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, তিন মাস আগে সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের মাধ্যমে জানতে পারি, নেপালে আমাদের মাকে পাওয়া গেছে। এরপর আমরা তাকে সরকারি খরচে দেশে ফেরানোর জন্য আবেদন করি। নেপালে বাংলাদেশের দূতাবাস তাকে দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেয়। কিন্তু করোনা ও লকডাউনের কারণে মায়ের দেশে ফেরা দেরি হয়। ইতিমধ্যে নেপালে বাংলাদেশি দূতাবাসের সহযোগিতায় মুঠোফোনে ভিডিও কলে মায়ের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তিনি আমাদের চিনতে পেরেছেন। আমরাও তাকে চিনেছি।

মাকে আনতে তারা চার ভাইবোন ও স্বজনেরা মাইক্রোবাস ভাড়া করে ঢাকায় এসেছেন। যে মা সবার কাছে মৃত হয়ে গিয়েছিলেন, সেই মাকে এত বছর পর ফিরে পাওয়ার আনন্দ-অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়, বললেন তিনি।

কাঠমান্ডুতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের কনস্যুলার মো. মাসুদ আলমের ইস্যু করা চিঠির সূত্রে জানা গেছে, এ বছরের ৩০ মে নেপালে বাংলাদেশি দূতাবাস আমেনা খাতুনের সন্ধান পায়। তিনি নেপালের সুনসারি জেলার ইনারোয়া শহরে বাসাবাড়ি ও হোটেলে কাজ করতেন। বার্ধক্যের কারণে তিনি কাজ করতে না পেরে রাস্তাঘাট ও ফুটপাতে অবস্থান করছিলেন। পরে ইনারোয়া পৌরসভার কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে সুনসারি জেলা প্রশাসনের সেফ হাউসে রাখেন। নেপালের এক ব্যক্তি তার ফেসবুকে বিষয়টি পোস্ট করেন। ওই পোস্টে তিনি আমেনাকে বাংলাদেশি বলে উল্লেখ করেন। পোস্টটির কমেন্টে নেপালে বাংলাদেশ ইয়ুথ কনক্লেভের চেয়ারম্যান অভিনাভ চৌধুরী বাংলাদেশ দূতাবাসের কনস্যুলারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এরপর বাংলাদেশের একটি গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় বগুড়ার ধুনটে তার পরিবারের খোঁজ মেলে।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.