নোয়াখালীতে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল, আটক ১০

জেলা আওয়ামী লীগের বিবদমান তিন পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নোয়াখালী পৌর এলাকায় প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল করেছে দলটির একটি পক্ষ। এ সময় পুলিশের লাঠিচার্জে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ সময় নোয়াখালী পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে পুলিশ ১০ জনকে আটক করেছে। এমন পরিস্থিতিতে শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে নোয়াখালী পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর কয়েকজন সমর্থক একটি মিছিল নিয়ে জেলা আ.লীগের কার্যালয়ের সামনে পৌঁছলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে।

এসপি মো. শহীদুল ইসলাম জানান, কিছু লোক ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিলের চেষ্টা করেছে। পুলিশ তাদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় পুলিশ বিভিন্ন স্থান থেকে ১০ জনকে আটক করে। মিছিলকারী যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কোন নেতার অনুসারী তা জানাতে পারেনি পুলিশ। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

জানা যায়, আওয়ামী লীগের বিবদমান তিন পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নোয়াখালী পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। সোমবার ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এর মধ্যেই বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় সাংসদের ২০-২৫ জন কর্মী একটি মিছিল নিয়ে জেলা আ.লীগের কার্যালয়ের সামনে এলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এসময় নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাক্কাধাক্কি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। লাঠিচার্জে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। কার্যালয় ছাড়াও এমপির সমর্থকরা শহরের বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে মিছিল করেছে।

এদিকে জেলায় যেন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য জেলা আ.লীগ কার্যালয়, টাউন হল মোড় ও পৌরসভা ভবনের সামনে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। শহরের বিভিন্ন সড়ক ও মোড়ে মোড়ে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাবের টহল রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেরা।

জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) দীপক জ্যোতি খিসা জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে প্রশাসন।

উল্লেখ্য, গত রোববার টাউন হল মোড়সহ শহরের বিভিন্ন স্থানে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় জড়িয়ে পড়েন আ.লীগের তিন পক্ষের নেতাকর্মীরা। এসময় কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ৯ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। পরদিন সোমবার সকাল ১০টায় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী ও টাউন হল মোড়ে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শিহাব উদ্দিন শাহিন কর্তৃক সমাবেশ ও জনসভা করার ঘোষণা দেন। একই সময় পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নোয়াখালী পৌরসভা চত্বরে কর্মী সমাবেশের ঘোষণা দেন পৌর মেয়র শহিদ উল্লাহ খান সোহেল। এমন পরিস্থিতিতে পৌর এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রবিবার সন্ধ্যায় ১৪৪ ধারা জারির ঘোষণা দেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.