খাদ্য সংকটে শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা, আরও অর্থ পাঠালো বাংলাদেশ

পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা না থাকায় ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে বৈদেশিক মুদ্রা ফুরিয়ে যাওয়ায় প্রয়োজনীয় খাবার আমদানি করতে পারছে না শ্রীলঙ্কা। ফলে চরম খাদ্য সংকটের মুখে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে দেশটি। এ অবস্থায় প্রতিবেশীর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।

আজ মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) শ্রীলঙ্কার জন্য আরও ১০ কোটি ডলার ছাড় করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৮৫২ কোটি টাকা।

বৈদেশিক মুদ্রার সংকটে ভোগা শ্রীলঙ্কাকে মোট ২০ কোটি ডলার দিতে চেয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে প্রথম দফায় গত ১৯ আগস্ট পাঁচ কোটি ডলার দেওয়া হয়। অর্থাৎ প্রতিশ্রুত অর্থের সিংহভাগ এরই মধ্যে পাঠানো হয়েছে।

তবে শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া এই সাহায্য সরাসরি অনুদান কিংবা ঋণ নয়। ২০ কোটি ডলারের বদলে শ্রীলঙ্কা সমপরিমাণ রুপি বাংলাদেশকে দেবে। এর সঙ্গে কিছু সুদও পাবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এটিকে বলা হয় ‘কারেন্সি সোয়াপ’ নীতি।

মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) লঙ্কান প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে জানিয়েছেন, চিনি, চালসহ অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য মজুত ঠেকাতে তিনি জরুরি আইন কার্যকরের নির্দেশ দিয়েছেন। এর ফলে সরকারি কর্মকর্তারা ব্যবসায়ীদের মজুত করা খাদ্য জব্দ, মজুতকারীকে গ্রেফতার ও সরকার পণ্যের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা পেয়েছে।

শ্রীলঙ্কার বাণিজ্যমন্ত্রী বান্দুলা গুনাবর্ধনে বলেছেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী খাদ্যপণ্য মজুত করায় এই ঘাটতি দেখা দিয়েছে এবং তার জন্য জনগণকে দুর্দশায় পড়তে হচ্ছে।

আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শ্রীলঙ্কায় সম্প্রতি চিনি, চাল, পেঁয়াজ ও আলুর মতো খাদ্যপণ্যের দাম ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এছাড়া করোনা ভাইরাস আতংকের মধ্যেই গুঁড়াদুধ, কেরোসিন তেল ও রান্নার গ্যাসের জন্য দোকানগুলোর সামনে ক্রেতাদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে দেশটিতে ১৬ দিনের কারফিউ জারি করা হয়েছে, যা শেষ হবে আগামী সোমবার। সেখানে এখনো প্রতিদিন করোনায় দুই শতাধিক মানুষ মারা যাচ্ছে। এরপরও বাধ্য হয়েই দোকানের সামনে ভিড় করছেন সাধারণ লোকজন।

করোনা ভাইরাস মহামারির ধাক্কায় ২০২০ সালে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছিল রেকর্ড ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। এসময় তাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও ঘাটতি দেখা দেয়। ২০১৯ সালে যেখানে শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল সাড়ে সাতশ কোটি ডলার, তা কমতে কমতে চলতি বছরের জুলাইয়ে এসে দাঁড়ায় মাত্র ২৮০ কোটি ডলারে।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.