স্পট ফিক্সিংয়ে কঠিন শাস্তি পেলো আরামবাগ

ঘরোয়া ফুটবলে পাতানো ম্যাচ পুরোনো ইস্যু। তবে চলতি ফুটবল মৌসুমে বেটিং, স্পট ফিক্সিংয়ে ছিল নতুনত্ব। এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনও বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) বিষয়টির অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছে। বাফুফে অনেক তদন্ত করে শেষ পর্যন্ত আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সাথে সংশ্লিষ্ট চার ব্যক্তিকে আজীবন নিষিদ্ধ এবং আরামবাগ ক্লাবকে প্রথম বিভাগ ফুটবলে অবনমনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিসিপ্লিনারি কমিটি।

বাফুফের ডিসিপ্লিনারি কমিটির চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন আজ রোববার (২৯ আগস্ট) এই শাস্তি প্রসঙ্গে বলেন, পাতানো খেলা শনাক্তকরণ কমিটি অনেকগুলো সভা করে। আমাদের কাছে তারা একটি রিপোর্ট দেয়। সেই রিপোর্ট এবং আমাদের ডিসিপ্লিনারি কোডের ভিত্তিতে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

বাংলাদেশের ফুটবলে পাতানো ম্যাচের আগে শাস্তি হলেও বেটিং কিংবা ফিক্সিংয়ের জন্য এ রকম শাস্তি এবারই প্রথম। এএফসি’র তদারকির জন্য বাফুফে গুরুত্ব সহকারেই এই তদন্ত করেছে।

আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের অনৈতিক কার্যকলাপের প্রমাণ পেয়েছিল এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনও। এএফসির নির্দেশনা পেয়েই বাফুফে ক্লাবটির বিরুদ্ধে অধিকতর তদন্ত করে। বাফুফের পাতানো খেলা শনাক্তকরণ কমিটি সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতা নিয়ে নানা তথ্য-উপাত্ত এবং ক্লাবের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের মোবাইল কথোপকথনের ফরেনসিক প্রতিবেদনে স্পট ফিকিংয়ের প্রমাণ পায়।

পাতানো খেলা শনাক্তকরণ কমিটি তাদের তদন্ত প্রতিবেদন ডিসিপ্লিনারি কমিটিতে জমা দেওয়ার পর ক্লাবটিকে পেশাদার ফুটবল লিগ থেকে বহিস্কার করে প্রথম বিভাগে নামিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং প্রথম বিভাগে দুই বছর খেলার নির্দেশ দেয়।

ক্লাবের কর্মকর্তা সাবেক সভাপতি ও পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান এম স্পোর্টস এর স্বত্বাধিকারী মো. মিনহাজুল ইসলাম মিনহাজ, সাবেক টিম ম্যানেজার গওহর জাহাঙ্গীর রুশো, সাবেক ট্রেনার ভারতের মাইদুল ইসলাম শেখ ও সহকারী ম্যানেজার আরিফ হোসেনকে ফুটবলে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ক্লাবের সাবেক ফিজিও ভারতের সঞ্চয় বোস, প্লেয়ার এজেন্ট ভারতের আজিজুল শেখকে ফুটবল থেকে ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ক্লাবের খেলোয়াড় আপেল মাহমুদকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ৫ বছরের জন্য।
তিন বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে খেলোয়াড় আবুল কাশেম মিলন, আল আমিন, মো. রকি, জাহিদ হোসেন, রাহাদ মিয়া, সৈকত, শামীম রেজা, অস্ট্রেলিয়ান স্মিথকে।

দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে ফুটবলার ওমর ফারুক, রাকিবুল ইসলাম, মেহেদী হাসান ফাহাদ, মিরাজ মোল্লা ও নাইজেরিয়ান চিজোবা ক্রিস্টোফারকে।

অবনমন ও নিষিদ্ধের পাশাপাশি ক্লাবকে পাঁচ লাখ টাকা আর্থিক জরিমানাও করা হয়েছে। সেই জরিমানার অর্থ আগামী এক মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।

বাফুফে আরামবাগের চারটি ম্যাচ ও ব্রাদার্সের কয়েকটি ম্যাচে স্পট ফিক্সিংয়ের সন্দেহ করেছিল। পাতানো খেলা শনাক্তকরণ কমিটি অবশ্য ব্রাদার্সের ম্যাচগুলোতে সেভাবে সম্পৃক্ততা পায়নি। আরামবাগের ম্যাচগুলো নিয়ে তদন্ত শেষে রিপোর্টের ভিত্তিতে শাস্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিসিপ্লিনারি কমিটি।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.