এবারও আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি বিএনপির

নির্বাচন কমিশনে ২০২০ সালের আয়-ব্যয়ের হিসাব দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। এতে দেখা যায় টানা দ্বিতীয়বারের মতো দলটির আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হয়েছে। ফলে ঘাটতিতে থাকা অর্ধকোটি টাকা আগের তহবিল থেকে জোগান দিয়েছে বিএনপি।

নির্বাচন ভবনে আজ বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ইসি সচিবের কাছে দলের ২০২০ পঞ্জিকা বছরের হিসাব দেওয়ার পর এমন তথ্য জানান।

সাংবাদিকদের সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স জানান, ২০২০ সালে বিএনপির আয় হয়েছে ১ কোটি ২২ লাখ ৫৩ হাজার ১৪৯ টাকা। আর ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৭৪ লাখ ৫২ হাজার ৫১৩ টাকা। ব্যয় বেশি হয়েছে ৫১ লাখ ৯৯ হাজার ৩৬৪ টাকা। যা বিএনপির তহবিল থেকে খরচ করা হয়েছে।

গত বছর যে (২০১৯ পঞ্জিকা বছর) হিসাব দিয়েছিল দলটি, তাতে সে বছর আয়ের চেয়ে তিনগুণের বেশি ব্যয় হয়েছিল। সে সময় বিএনপির আয় করেছে ৮৭ লাখ ৫২ হাজার ৭১০ টাকা। আর ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৬৬ লাখ ৮৬ হাজার ১৩৭ টাকা। আয়-ব্যয়ের পার্থক্য ছিল ১ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৪২৭ টাকা। অর্থাৎ আয়ের তিনগুণেরও বেশি ব্যয় হয়েছে।

দলগুলো মনোনয়ন ফরম বিক্রি, দলীয় সদস্যদের মাসিক চাঁদা, এককালীন অনুদান থেকে আয় করে থাকে দলটি। আর অফিসের বিভিন্ন খরচ, নির্বাচনী ব্যয়, ত্রাণ কার্যক্রম, কর্মচারী বেতর-ভাতা, বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন প্রভৃতি খাতে ব্যয় করে থাকে। বিএনপি কর্মচারীদের বেতন-বোনাস দেওয়া বাবদ সবচেয়ে বেশি ব্যয় করেছে। ৭৫ লাখ টাকার বেশি ব্যয় হয়েছে এ খাতে।

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখা থেকে জানা গেছে, ২০১৮ বছরে দলটির আয় হয়েছি ৯ কোটি ৮৬ লাখ ৫৬ হাজার ৩৮০ টাকা। আর ব্যয় হয়েছিল ৩ কোটি ৭৩ লাখ ২৯ হাজার ১৪৩ টাকা। তখন দলীয় তহবিলে মোট উদ্বৃত্ত ছিল ৬ কোটি ১৩ লাখ ২৭ হাজার ২৩৭ টাকা।

২০১৭ সালে দলটি মোট আয় দেখিয়েছিল ৯ কোটি ৪৬ লাখ ২৪ হাজার ৯০২ টাকা। আর মোট ব্যয় দেখিয়েছে ৪ কোটি ১৯ লাখ ৪১ হাজার ৯৫৪ টাকা। ৫ কোটি ২৬ লাখ ৫২ হাজার ৯৪৮ টাকা হাতে বা ব্যাংকে ছিল সেবছর।

২০১৬ সালে দলটি আয় হয়েছিল ৪ কোটি ১৩ লাখ ৬৮ হাজার ৭৩০ টাকা। আর ব্যয় হয়েছিল ৩ কোটি ৯৯ লাখ ৬৩ হাজার ৭৫২ টাকা। আয় বেশি হয়েছে ১৪ লাখ ৪ হাজার ৭৭৮ টাকা।

এর আগের তিন বছর দলটি ঘাটতিতে ছিল। ২০১৫ পঞ্জিকা বছরে বিএনপি ১৪ লাখ ২৬ হাজার ২৮৪ টাকা ঘাটতি দেখিয়েছিল। ওই সময় দলটি আয় দেখিয়েছিল ১ কোটি ৭৩ লাখ ৩ হাজার ৩৬৫ টাকা। আর ব্যয় দেখিয়েছে ১ কোটি ৮৭ লাখ ২৯ হাজার ৬৪৯ টাকা।

২০১৪ পঞ্জিকা বছরে দলটি বিভিন্ন খাতে দুই কোটি ৮৭ লাখ ৪৮ হাজার ৫৭৪ টাকা আয় দেখিয়েছে। আর ব্যয় দেখিয়েছে তিন কোটি ৫৩ লাখ তিন হাজার টাকা। এতে আয়ের চেয়ে ৬৫ লাখ ৫৪ হাজার ৪২৬ টাকা বেশি ব্যয় হয়েছে দলটির।

২০১৩ পঞ্জিকা বছরে দলটি ৭৬ লাখ ৫ হাজার ৭৬২ টাকা আয়ের বিপরীতে ২ কোটি ২৭ লাখ ২৫ হাজার ৩২৬ টাকা ব্যয় দেখিয়েছিলো। সে সময় ঘাটতি ছিলো প্রায় দেড় কোটি টাকা।

প্রতি বছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে দলগুলোকে আয়-ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশনে দাখিল করতে হয়। করোনার কারণে দু’বছর থেকে এক মাস করে সময় বাড়াচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এ পর্যন্ত পাঁচটির মতো দল সাড়া দিয়েছে। তবে আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য দল এখনও হিসাব জমা দেয়নি।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.