আফগানদের আশ্রয় না দিয়ে শেখ হাসিনা ভুল করেছেন: জাফরুল্লাহ

যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে আফগানিস্তানের নাগরিকদের বাংলাদেশে আশ্রয় না দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বড় ভুল করেছে বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

তিনি বলেন, এই ঘটনার মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার যে স্বপ্ন শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া, সেটি থেকে অনেক দূরে সরে গিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত ‘করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র না হলে যা হয়, তাই করছে এই সরকার। একের পর এক ভুল করছে। দুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে অনুরোধ করেছিল হাজার বিশেক আফগানকে সাময়িকের জন্য জায়গা দিতে। আপনি এটি না করে ভুল কাজ করলেন। আপনার জীবনের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন নোবেল প্রাইজ পাওয়া তার থেকে অনেক দূরে সরে গেলেন। তারা বিপদে পড়েছে তাদের কিছু লোক যদি আমাদের এখানে থাকে তবে খুব বেশি অসুবিধা হবে না। তবে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আমাদের একটা জায়গা হত।

শেখ হাসিনা ভুলের পর ভুল করে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা নতুন দায়িত্ব পেয়েছে, তারা তাদের নেতাকে শ্রদ্ধা জানাবে। সেখানে কেন আপনারা পুলিশ দিয়ে পেটাবেন। এই ধরনের কাজগুলো আপনারা খুব খারাপ করছেন। যে পুলিশকে দিয়ে আজকে তাদের পেটাচ্ছেন একদিন দেখবেন এই পুলিশ ঘুরে দাঁড়াবে। এইসব বন্ধ করেন।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও বলে গিয়েছিলেন যেখানে মুক্তির আন্দোলন হবে সেখানে আমাদের সমর্থন থাকবে। এটি সংবিধানে লেখা আছে। ভারতে যতগুলো আন্দোলন হচ্ছে আমাদের লুকোচুরি না করে সরাসরি সমর্থন করা দরকার। তা না হলে মহাবিপদ আসবে। আজকে যদি তালেবানদের স্বীকৃতি না দেই তাহলে তারা ভারতের হিন্দুত্ববাদের দিকে যাবে। সেখানে তারা উদারপন্থী ইসলামিক রাষ্ট্র না হয় কট্টরপন্থী একটা ধর্মান্ধ রাষ্ট্রে পরিণত হবে। আমরা যদি তাদেরকে এখনই স্বীকৃতি দেই, তাদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করি, তাদেরকে প্রভাবিত করতে পারি একটা উদার ইসলামিক রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার জন্য। তাই আজকে তাদেরকে বাইরে ঠেলে না দিয়ে তাদের সাথে সম্পর্ক করা উচিত।

গোলটেবিল বৈঠকে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, মানুষ যদি না বাঁচে তাহলে দেশের এতো উন্নয়ন দিয়ে কি হবে? প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আমরা সবাইকে টিকার আওতায় আনব। গণটিকাদান শুরু হলো। কয়েকদিন যেতে না যেতেই গতকাল স্বাস্থ্যমন্ত্রী বললেন, আমাদের কাছে টিকা নেই। গণটিকাদান কর্মসূচি বন্ধ। রাগটা কার না উঠবে? জাফরুল্লাহ সাহেব বলেছেন রাশিয়ান টিকা এনে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন। জাফরুল্লাহ বলে তারা সেই টিকা নিলো না। এখন বলছে রাশিয়ান টিকা পাওয়া অনিশ্চিত। তারা পাওয়া টিকাটা নিলো না। এজন্য তাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত। অর্থ্যাৎ এই সরকারের আমলে আমরা নিরাপদ না।

আজকে চন্দ্রিমা উদ্যানে ছাত্রদল ও পুলিশ সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করে মান্না বলেন, যেকোন দলের কর্মীরা তাদের নেতার কবরে ফুল দিতে যায়। এটা স্বাভাবিক। তাতে তাদের পিটাতে হবে, গুলি করতে হবে এই রকম ঘটনা কখনও দেখিনি। আপনারা সীমান্ত বন্ধ করতে পারেন না। সীমান্ত দিয়ে ভাইরাস নিয়ে মানুষ ঢুকে যায়, সেটা বন্ধ করতে পারেন না। কেবলমাত্র বিরোধী দলের ওপর নির্যাতন করতে পারেন। আপনাদের উন্নয়ন মানে অত্যাচারী উন্নয়ন। এসমস্ত উন্নয়ন আমাদের শোনানোর দরকার নেই।

গোলটেবিল বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ ছাত্র মিশনের সভাপতি সৈয়দ মো. মিলন প্রমুখ।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.