পরীমণির জামিন আবেদনে যেসব কারণ দেখানো হয়েছে

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় গ্রেফতার ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত নায়িকা পরীমণির জামিন আবেদন করেছেন তার আইনজীবী মজিবুর রহমান। ‘চিকিৎসার স্বার্থে’ পরীমণির জামিন ‘আবশ্যক’ বলে আদালতে উল্লেখ করেন তিনি।

পরীমণির আইনজীবী আদালতে উল্লেখ করেন, পরীমণি ‘ভারটিগো’ এবং ‘প্যানিক অ্যাটাক’-এর রোগী। তিনি দীর্ঘসময় পুলিশ কাস্টডিতে (হেফাজতে) ‘অমানবিক নির্যাতনের’ শিকার হয়ে বিপর্যস্ত ও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। হেফাজতে থাকলেও মামলা সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদে কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদঘাটিত হয়নি। জরুরি চিকিৎসার স্বার্থে তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া আবশ্যক।

আজ শুক্রবার (১৩ আগস্ট) বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে পরীমণিকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এসময় মামলার মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক গোলাম মোস্তফা।

ওই আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেছেন, মামলার তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আসামি শামসুন্নাহার স্মৃতি ওরফে স্মৃতিমনি ওরফে পরীমণিকে জেলহাজতে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন। আসামি জামিনে মুক্তি পেলে মামলার তদন্তে বিঘ্ন সৃষ্টি হতে পারে। এমনকি পলাতক হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে মামলার বিষয়ে আসামি (পরীমণি) বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত দিয়েছেন। মামলার তদন্তের স্বার্থে তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে, যোগ করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

সেখানে আরও বলা হয়, মামলার অভিযোগের সঙ্গে তার জড়িত থাকার ব্যাপারে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। তদন্ত অব্যাহত আছে। মামলার তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তাকে জেলহাজতে আটকে রাখা একান্ত প্রয়োজন।

অপরদিকে, পরীমণির আইনজীবী মজিবুর রহমান জামিন চেয়ে আবেদন করেন। ঢাকা মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মন্ডলের আদালতে এ বিষয় শুনানি হবে।

আইনজীবী মজিবুর রহমান জামিনের আবেদনে বলেছেন, আসামি পরীমণি একজন প্রথম সারির চিত্রনায়িকা। ‘ফোর্বস ম্যাগাজিন’ ডিজিটাল তারকা হিসেবে বিশ্বের ১০০ জনের মধ্যে তার নাম রয়েছে। যা বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জন্য গৌরবজনক। আসামি জেলহাজতে আটক থাকলে চলচ্চিত্রের অঙ্গনের অপূরণীয় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন কোম্পানি ও চলচ্চিত্র নির্মাতাদের সাথে যে চুক্তি হয়েছে তা ভঙ্গেরও সম্ভাবনা রয়েছে। সম্প্রতি ‘প্রীতিলতা’ নামক সরকারি সিনেমার জন্য ফটোশুট হয়েছে। এছাড়াও কয়েকটি চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের শিডিউল ভেঙে পড়েছে।

আবেদনে আরও বলা হয়, পরীমণির বিরুদ্ধে ১৮.৫ লিটার মদ ও অন্যান্য মাদক রাখার অভিযোগ করা হয়েছে, যা আসামির দখল থেকে উদ্ধার করা হয় নাই।

আইনজীবী মজিবুর রহমান জামিনের আবেদনে আরও বলেন, পরীমণি অভিযান পরিচালনার সময় দ্য আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়ন অর্ডিন্যান্স ১৯৭৯ এর ৬ এবং ৬এ ধারায় লঙ্ঘন করে অভিযান পরিচালনা করা হয়। যার ফলে একটি ভিত্তিহীন মামলা দায়ের করা হয় তার বিরুদ্ধে। তাই তিনি জামিন পেতে পারেন।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.