৯০ দিনে তালেবানের হাতে যাবে কাবুল: আমেরিকা

একসময় আমেরিকার কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞ মনে করেছিলেন, আঞ্চলিক রাজধানীগুলো দখল করলেও এখন কাবুলে ঢুকবে না তালেবান সেনারা। আলোচনার রাস্তা খোলা রাখবে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই ভাবনা থেকে সরে গেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। মার্কিন প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা মনে করছেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে কাবুল সম্পূর্ণ ভাবে দখল করে নেবে তালেবান বাহিনী। ক্ষমতা সম্পূর্ণভাবে নিজেদের হাতে নেবে। এই পরিস্থিতিতে তালেবান প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন তুরস্কের রাষ্ট্রপ্রধান এরদোয়ান।

আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি বুধবার মাজার-ই-শরিফে গেছিলেন। মাজার-ই-শরিফের সিংহভাগ এখন তালেবানদের দখলে। আফগান বাহিনীর সঙ্গে তাদের তীব্র সংঘর্ষ চলছে। তারই মধ্যে মাজার-ই-শরিফ এয়ারবেসে গিয়ে আফগান সেনাদের সঙ্গে কথা বলেন গনি। আফগান প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তালেবান বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ের নতুন ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করছে সরকার।

আফগান প্রশাসন যা-ই বলুক, তালেবান সেনারা তাদের অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। বুধবার কুন্দুজ বিমানবন্দর তারা দখল করেছে। তালেবান সূত্র দাবি করেছে, বুধবার উত্তর আফগানিস্তানে আরো দুইটি শহর তারা দখল করেছে।

আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে সে দেশে ডিপোর্টেশন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জার্মানি এবং নেদারল্যান্ডস। সম্প্রতি জার্মানি এবং নেদারল্যান্ডসে আশ্রয়প্রার্থী আফগান শরণার্থীদের দেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আপাতত তা হবে না বলে জানিয়েছে দুই দেশের প্রশাসন।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। বুধবার দেশটির একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে এরদোয়ান জানিয়েছেন, তালেবানের সঙ্গে বৈঠকে আগ্রহী তিনি। আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এই বৈঠক করতে চান তিনি। ন্যাটোর যে বাহিনী এতদিন আফগানিস্তানে ছিল, তাতে তুরস্কের সেনাও ছিল।

তিনি আরও জানিয়েছেন, কাবুল বিমানবন্দর রক্ষার জন্য তুরস্কের সেনা পাঠাতেও প্রস্তুত তিনি। কাবুল বিমানবন্দর এখনো ঘিরে রেখেছে মার্কিন সেনা। ওই বিমানবন্দর ব্যবহার করেই দেশে ফিরছেন মার্কিন সেনারা। বাইডেন প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দ্রুত ওই সেনাদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে। মার্কিন সেনা চলে গেলে কাবুল বিমানবন্দর আর সুরক্ষিত থাকবে না।

এদিকে এরদোয়ানের প্রস্তাবের এখনো কোনো জবাব দেয়নি তালেবান। বুধবার তালেবান মুখপাত্র দাবি করেছেন, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে আফগানিস্তানের যে ছবি তুলে ধরা হচ্ছে, তা ঠিক নয়। সাধারণ আফগান নাগরিকদের উপর কোনোরকম নির্যাতন চালানো হচ্ছে না। কেবলমাত্র আফগান সেনাদের সঙ্গে লড়াই করছে তালেবান। সূত্র: ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, এএফপি, এপি

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.