৯ কোম্পানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে বিএসইসির তদন্ত কমিটি

চাঙ্গা পুঁজিবাজারে যেন ভাল-মন্দ সব এক হয়ে গেছে। বরং ভাল কোম্পানির চেয়ে অনেক দূর্বল মৌলের কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ছে বেশি। সাম্প্রতিক সময়ে অস্বাভাবিক হারে দাম বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৯টি কোম্পানির দাম বৃদ্ধির কারণ খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।এ লক্ষ্যে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সকালে তদন্ত সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে।

বিএসইসি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

আলোচিত কমিটির প্রধান করা হয়েছে বিএসইসির পরিচালক শেখ মাহবুব উর রহমানকে। কমিটির অন্য সদস্যরা হচ্ছেন- বিএসইসির সহকারী পরিচালক জিয়াউর রহমান, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) উপমহাব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া ও সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) অ্যাপ্লিকেশন সাপোর্ট বিভাগের প্রধান মইনুল হক।

কমিটিকে কমিশনে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে ৬০ কার্যদিবস সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

যে কোম্পানিগুলোর বিষয়ে তদন্ত হবে, সেগুলো হচ্ছে- আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, জিবিবি পাওয়ার, এমারেল্ড অয়েল, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স, ন্যাশনাল ফিড মিল, পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, ঢাকা ডায়িং, ফুয়াং সিরামিক ও বিকন ফার্মা।

উল্লেখ, আলোচিত কোম্পানিগুলোর মধ্যে এমারেল্ড অয়েল, ন্যাশনাল ফিড মিল, পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ও ঢাকা ডায়িংয়ের উৎপাদন মাঝখানে বেশ কিছুদিন বন্ধ ছিল। তারপরও গত ৬ মাসে কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম ৫ থেকে ৭ গুণ পর্যন্ত বেড়েছে।

তিন বছর আগেও বিকন ফার্মা তার উৎপাদনক্ষমতার বেশিরভাগ ব্যবহার করতে পারতো না। কারণ বাজারে এর উৎপাদিত ওষুধের ওই পরিমাণ চাহিদা ছিল না। তাই কোম্পানিটি তার কারখানায় নিজেদের ওষুধের পাশাপাশি ভাড়ায় স্কয়ার ফার্মার ওষুধ তৈরি করে আয় বাড়ানোর চেষ্টা করেছে। তবে গত ২ বছরে কোম্পানিটির আয় কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু আয় ৩৬ শতাংশ বাড়লেও শেয়ারের দাম বেড়েছে প্রায় ৮০০ শতাংশ।

তদন্ত কমিটির বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম অর্থসূচককে বলেন, আমরা ইতিমধ্যে দেখছি কিছু লো-ফান্ডামেন্টাল কোম্পানি, যাদের ইপিএস এবং পারফমেন্স তুলনামূলক খারাপ এবং এসকল কোম্পনির মাঝে কয়েকটির উৎপাদনও বন্ধ আবার কিছু কোম্পানি মোটামুটি ভালো কিন্তু তাদের শেয়ারের মূল্য অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়েছে- এ ধরনের কিছু কোম্পানি আমরা খুজে বের করেছি যার প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা ৯টি কোম্পানির আর্থিক বিবরণ অনুসন্ধান এবং ফাইন্যান্সিয়াল ফল্ট সহ খুটিনাটি বিষয়গুলো তদন্তের জন্য আমরা তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি ।
এছাড়াও তাদের কোন প্রাইস ম্যানুপ্যুলেশন কিংবা অভ্যন্তরীণ লেনদেন হয়েছে কি-না এবং সিকিউরিটিজ এন্ড র‍েগুলেশন এর নন- কমপ্লাইন্স থাকে এগুলো তদন্ত করে ৬০ কার্যদিবসের ভিতর রিপোর্ট প্রদান করবে তদন্ত কমিটি।
তিনি আরও আশা করেন এই তদন্তের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে এবং বাজারকে যারা অস্থিতিশীল করতে চায় তারা এসব অপকর্ম থেকে বিরত থাকবে। এছাড়াও দেশের পুঁজিবাজারে একটি বার্তা পৌঁছাবে যে পুঁজিবাজারের উপর কমিশনের নজরদারী বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বাজারকে অস্থিতিশীল করতে চায় এমন কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.