গণটিকার কর্মসূচিও সরকার দলীয়করণ করেছে: ফখরুল

দেশব্যাপী শুরু হওয়া গণটিকা কর্মসূচিকে সরকার দলীয়করণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার (৮ আগস্ট) সকালে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এ কথা বলেন। এ সময় তিনি ‘সার্বজনীন’ টিকা প্রদানের দাবি জানান।

ফখুরল বলেন, ‘জাতীয় স্থায়ী কমিটি মনে করে সরকার পর্যাপ্ত টিকা সংগ্রহ না করেই গণটিকার নামে গণ-প্রতারণা শুরু করেছে। চরম অব্যবস্থাপনা এবং দলীয়করণের কারণে এই লোক দেখানো গণটিকা অভিযান গণ-সংক্রমণ অভিযানে পরিণত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘স্থায়ী কমিটি সরকারকে সকল প্রকার দলীয়করণের প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে এসে সার্বজনীন টাকা প্রদানের কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। গণটিকা প্রদানের কর্মসূচি সম্পূর্ণ দলীয় কর্মসূচিতে পরিণত করার উদ্দেশ্যে দলীয় কর্মীদের সম্পৃক্ত করার ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গতকাল (৭ আগস্ট) সারাদেশে সরকার গণটিকার নামে গণ-তামাশা শুরু করেছে। তাদের (সরকার) হাতে টিকা এসেছে ১ কোটি ৬০ লাখ। অথচ শতকরা ৭০ ভাগ মানুষকে টিকা দিতে হলে প্রয়োজন হবে ২৬ কোটি টিকা।’

তিনি বলেন, ‘প্রথম এক সপ্তাহে ১ কোটি টিকা প্রদানের কথা বলে একদিনে দিয়েছে ৩০ লাখ। তিনদিনে ১ কোটি দেয়ার কথা বলেছে। সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপেই প্রমাণিত হয়েছে টিকা প্রদানের ক্ষেত্রে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে।’

করোনা টিকার বিষয়ে সরকারের মন্ত্রী ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিদে বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন সিদ্ধান্ত এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পরস্পরবিরোধী বক্তব্য প্রদান ও পরে প্রত্যাহারের বিষয়গুলো তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এসবের মধ্যদিয়ে সরকারের সমন্বয়হীনতা ও দায়িত্বহীতার পরিচয় জনগণের কাছে স্পষ্ট হয়েছে।’

করোনাকালে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হ্রাস পাওয়া, দারিদ্র্যের সংখ্যা বৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে স্থায়ী কমিটির সভার উদ্বেগ প্রকাশের কথা জানান বিএনপি মহাসচিব। টিকা প্রদানে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ জনগণের সামনে উপস্থাপনের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।

গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সকালে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। গতকাল শনিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তসমূহ এই সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন মহাসচিব।

সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক হারুন আল রশিদ, মহাসচিব অধ্যাপক আব্দুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা এম এ সেলিম, জহিরুল ইসলাম শাকিল, মেহেদী হাসান, ফখরুজ্জামান, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, শামীমুর রহমান শামীম, প্রকৌশলী মাহবুব আলম, শফিকুল ইসলাম, চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন নসু, শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.