জাতিসংঘে মিয়ানমারের দূতকে হত্যার ছক, আটক ২

জাতিসংঘে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে হত্যার পরিকল্পনার অভিযোগে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ। তারা দুজনেই মিয়ানমারের নাগরিক। আটককৃতরা হলেন- ফিও হেইন হুত এবং ইয়ে হেইন যাউ। খবর বিবিসির

রয়টার্স বলছে, রাষ্ট্রদূতের হামলা চালাতে থাইল্যান্ডের এক অস্ত্র ব্যবসায়ীর ষড়যন্ত্রে যুক্ত হয়েছিলেন গ্রেপ্তার মিয়ানমারের দুই নাগরিক। থ্যাইল্যান্ডের ওই ব্যবসায়ী মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর কাছেও অস্ত্র বিক্রি করেন।

ফায়ো হাইন তুত এফবিআইকে জানিয়েছেন, থাই অস্ত্র ব্যবসায়ী অনলাইনে তার যোগাযোগ করে রাষ্ট্রদূতের ওপর হামলা এবং তাকে পদত্যাগে বাধ্য করার লোকজন ভাড়া করতে অর্থ দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন। রাষ্ট্রদূত পদত্যাগ না করলে হামলাকারীরা তাকে মেরে ফেলতে পারবে, এমনটাও বলেছিলেন ওই অস্ত্র ব্যবসায়ী। রাষ্ট্রদূতের গাড়ি যেন দুর্ঘটনায় পড়ে, সেজন্য সেটি নষ্ট করতে অস্ত্র ব্যবসায়ী ও ফায়ো হাইন তুত একটি পরিকল্পনাও করেছিলেন। হামলার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ফায়ো হাইন তুতের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ইয়ে হাইন জ এবং এজন্য জুলাইতে তাকে দুই দফায় চার হাজার ডলার দেওয়া হয়েছিল।

ফায়ো হাইন তুত এফবিআইকে জানিয়েছেন, হামলার পর তাকে আরও এক হাজার ডলার দেওয়ার কথা ছিল। ফায়ো হাইন তুতের সঙ্গে অর্থ লেনদেনের কথা ইয়ে হাইন জ স্বীকারও করেছেন। ওই অস্ত্র ব্যবসায়ীর হয়ে অন্যদের কাছে অর্থ পাঠাতেন ইয়ে হাইন। থাই অস্ত্র ব্যবসায়ীর অনুরোধে সম্প্রতি দুইজনের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের ব্যবস্থাও করেছিলেন তিনি।

জাতিসংঘে মিয়ানমার মিশনের এক নিরাপত্তারক্ষী এফবিআইকে জানিয়েছেন, রাষ্ট্রদূতের ওপর হামলা চালানো অথবা তাকে হত্যার জন্য একজন হামলাকারী ভাড়া করার পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেছেন ফায়ো হাইন তুত।

নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি অফিস জানিয়েছে, রাষ্ট্রদূত চিয়াও মোয়ে তুনকে তার পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য করতে তারা হামলাকারী ভাড়া করার পরিকল্পনা করেছিলেন। এই বছরের শুরুর দিকে ২০ বছর বয়সী হুতের অ্যাকাউন্টে চার হাজার মার্কিন ডলার পাঠিয়েছিলেন ২৮ বছর বয়সী যাউ। এই অর্থ ওই হামলার পরিকল্পনার অগ্রিম হিসেবে দেওয়ার কথা ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর বিবিসির

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ফিও হেইন হুত এবং ইয়ে হেইন যাউ মিলে জাতিসংঘে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের ওপর হামলা করে আহত অথবা হত্যা করার পরিকল্পনা করছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে এই হামলা করার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল। বিদেশি কূটনৈতিক এবং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তায় আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে নিরলস চেষ্টা করে যাচ্ছে, তাকে আমরা ধন্যবাদ জানাই।’

ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমার সেনাবাহিনী অভ্যুত্থান করার পর থেকে রাষ্ট্রদূত চিয়াও মোয়ে তুন সামরিক সরকারের কড়া সমালোচনা করে আসছেন। সামরিক জান্তা পরবর্তী সময়ে তাকে বরখাস্ত করলেও তিনি বিশ্ব দরবারে মিয়ানমারের বেসামরিক সরকারের প্রতিনিধিত্ব অব্যাহত রেখেছেন। এদিকে রাষ্ট্রদূতকে হত্যার পরিকল্পনার অভিযোগ এবং দুইজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে এখনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.