‘ইসরায়েল থেকে আড়িপাতার যন্ত্র কেনার প্রশ্নই আসে না’

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, আমাদের দেশের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী অপরের ফোনে আড়িপাতা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যেটা নাগরিকদের জন্য নিষিদ্ধ, সেটা সরকার করতে যাবে কেন? ইসরায়েল থেকে আড়িপাতার যন্ত্র বা সফটওয়্যার কেনার প্রশ্নই আসে না।

আজ মঙ্গলবার (২০ জুলাই) একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান ও ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত প্রতিবেদন এবং ‘পেগাসাস’ বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

স্মার্টফোনে আড়িপাতার জন্য ইসরায়েলে তৈরি হ্যাকিং সফটওয়্যার ‘পেগাসাস’ বিশ্বের ৪৫টি দেশে রয়েছে বলে কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থার অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। এ অনুসন্ধানের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে দেশগুলোর নাম প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশের নামও রয়েছে।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলোতে পেগাসাস বিষয়ে বলা হয়েছে, কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের তৈরি করা সবচেয়ে শক্তিশালী স্পাইওয়্যার হলো ইসরায়েলের এনএসও গ্রুপের তৈরি এই ‘পেগাসাস’। ইসরায়েল এটি বিভিন্ন দেশের সরকারের কাছে বিক্রি করেছে। এই হ্যাকিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশের কর্তৃত্ববাদী সরকার মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক, আইনজীবী ও রাজনীতিকদের ফোনে নজরদারি চালাচ্ছে।

‘পেগাসাস’ ব্যবহার করে যে কারো আইফোন কিংবা অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ঢুকে ব্যবহারকারীর মেসেজ, ছবি, ইমেইল পাচার করা সম্ভব। একইভাবে এ সফটওয়্যারের মাধ্যমে মালিকের অগোচরে গোপনে তার ভিডিও বা মাইক্রোফোন চালু করে কথোপকথনও রেকর্ড করা সম্ভব।

এ বিষয়টি প্রথমে প্যারিসভিত্তিক সংস্থা ফরবিডেন স্টোরিজ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের নজরে আসে। পরে তারা গার্ডিয়ান ও ওয়াশিংটন পোস্টসহ ১৭টি সংবাদমাধ্যমকে তা জানায়। কানাডার ইউনিভার্সিটি অব টরন্টোর সিটিজেন ল্যাবের গবেষণায় ৪৫টি দেশে ‘পেগাসাস’ থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়েছে।

আলোচিত ‘পেগাসাস’ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকারের এ ধরনের সফটওয়্যার কেনার কোনো প্রশ্নই আসে না। আমরা নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষার বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন রয়েছি।

গার্ডিয়ান ও ওয়াশিংটন পোস্টে বাংলাদেশের নাম আসা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মোস্তাফা জব্বার বলেন, বিদেশে বসে কেউ কেউ বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা করছে। এটি আগেও করেছে, এখনও করছে। সরকার এ বিষয়ে সজাগ রয়েছে বলেও জানান তিনি।

যেসব দেশের নাম উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো হলো- আলজেরিয়া, বাহরাইন, বাংলাদেশ, ব্রাজিল, কানাডা, মিসর, ফ্রান্স, গ্রিস, ভারত, ইরাক, ইসরায়েল, আইভরি কোস্ট, জর্ডান, কাজাখস্তান, কেনিয়া, কুয়েত, কিরগিজস্তান, লাটভিয়া, লেবানন, লিবিয়া, মেক্সিকো, মরক্কো, নেদারল্যান্ডস, ওমান, পাকিস্তান, ফিলিস্তিন অঞ্চল, পোল্যান্ড, কাতার, রুয়ান্ডা, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুইজারল্যান্ড, তাজিকিস্তান, থাইল্যান্ড, টোগো, তিউনিশিয়া, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, উগান্ডা, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, উজবেকিস্তান, ইয়েমেন ও জাম্বিয়া।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.