আরপিও’র বাংলা পাঠ প্রকাশ

নানা বাধা বিপত্তি পেরিয়ে বহুল আলোচিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২ এর বাংলা পাঠ প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দেশের নির্বাচন সংক্রান্ত সর্বোচ্চ এই আইনের সংশোধন ও বাংলা ভাষায় রূপান্তর নিয়ে অতীতে রাজনৈতিক অঙ্গনে অনেক বিতর্ক হয়েছে। তবে শিরোনামসহ বিদ্যমান আইনটিতে কোন প্রকার পরিবর্তন ছাড়াই রোববার (১৮ জুলাই) সরকারি গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার স্বাক্ষরিত গেজেটে আরপিও’র ৯৪ (ক) ধারা অনুসরণ করা হয়েছে। যদিও সরকারি প্রজ্ঞাপনে গত ১ জুলাই বাংলা পাঠটি প্রকাশের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিদ্যমান আদেশের বিধান অনুযায়ী এটাকে হুবহু বাংলা অনুবাদ করা হয়েছে। আরপিও প্রণয়নের সময়ই বাংলা পাঠ প্রকাশের বিধান থাকলেও বাংলা পাঠ প্রকাশ হলো ৫০ বছরের মাথায় এসে।

ইংরেজি ভাষায় প্রণীত গণপ্রতিনিধি আদেশের ৯৪ক ধারায় বাংলা পাঠ প্রকাশের বিধান রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আইনটি জারির পর সরকার সরকারি গেজেট দ্বারা একটি প্রামাণিক (authentic) বাংলা পাঠ প্রকাশ করতে পারবে। এতে আরও বলা হয়, বাংলা ও ইংরেজি পাঠে সাংঘর্ষিক কিছু দেখা দিলে ইংরেজি পাঠ প্রাধান্য পাবে।

সাধারণত কোনও আইন বাংলা ভাষায় প্রণয়ন হলে সেটি ইংরেজিতে অনুবাদের বিধান থাকলে সেখানে সাংঘর্ষিক কিছু দেখা দিলে বাংলা পাঠকে প্রাধান্য দেওয়ার বিধান থাকে। দেশের সংবিধানের ক্ষেত্রেও এমন বিধান রয়েছে।

আরপিও’র বাংলা পাঠ প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, আমি এটা অক্ষরে অক্ষরে পরীক্ষা করে বাংলায় করে দিয়েছি।

এদিকে গেজেট দ্বারা বাংলায় পাঠ প্রকাশের আগেই নির্বাচন কমিশন আরপিও বাংলায় অনুবাদসহ কিছুক্ষেত্রে পরিবর্তন-পরিমার্জন করে সংশোধনীর উদ্যোগ নিয়েছিল। প্রথমে আইনের শিরোনামসহ বেশ কিছু ধারার পরিবর্তনের উদ্যোগ হয়েছিল। ইসি ওই সময় আইনের শিরোনাম গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের পরিবর্তে গণপ্রতিনিধিত্ব আইন করার প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে প্রণীত আরপিওর শিরোনামসহ কিছু ধারার পরিবর্তনে সরকারের পক্ষ থেকে আপত্তি দেওয়া হয়। পরে শিরোনাম ঠিক রেখে আইনে সামান্য কিছু ধারার পরিবর্তনের সুপারিশ করে কমিশন তা সংশোধনীর উদ্যোগ নিয়েছিল। তবে, আইনটি সংশোধনীর ক্ষেত্রে দৃশ্যমান কোনও অগ্রগতি নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা আইনটির সংশোধনী কমিশন অনুমোদন করার পর তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। এটি সেখান থেকে ফেরত এসেছে কিনা বা কোন পর্যায়ে রয়েছে সেই তথ্য এই মুহূর্তে আমার কাছে নেই।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.