ভারতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশি কিনা, প্রশ্ন তুলে মোদীকে চিঠি

ভারতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পদে দায়িত্ব নেওয়া বিজেপির সংসদ সদস্য নিশীথ প্রামাণিক আদতে বাংলাদেশের নাগরিক ছিলেন কি না, তা নিয়ে দিল্লির রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় শুরু হয়েছে। আসামের কংগ্রেস এমপি রিপুন বোরা খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে অভিযোগ জানিয়েছেন, নিশীথ প্রামাণিক বাংলাদেশের লোক এবং তিনি নিজেকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে প্রমাণ করতে পার্লামেন্টে যে নথি পেশ করেছেন সেটাও নাকি জাল!

আসামের কংগ্রেস সাংসদ রিপুন বরা এ প্রশ্ন তুলে একাধিক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরের প্রসঙ্গ যোগ করে টুইট করেছেন বলে জানিয়েছে এবিপি আনন্দ।

টুইটে রিপুন লিখেছেন, ‘একজন বিদেশি নাগরিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, বিষয়টি গভীর উদ্বেগের। তদন্ত করে বিষয়টি স্পষ্ট করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে তিনি লিখেছেন, বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে, নিশীথ প্রামাণিক বাংলাদেশি নাগরিক। তার জন্মস্থান বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ি থানার হরিনাথপুর। তিনি কম্পিউটার নিয়ে পড়াশোনার জন্য এ দেশে আসেন। ডিগ্রি লাভের পর তিনি প্রথমে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। পরে বিজেপিতে যোগ দিয়ে কোচবিহারের সাংসদ নির্বাচিত হন।

এ ব্যাপারে কোচবিহার তৃণমূলের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতীম রায় বলেছেন, তিনি বিষয়টি সোশাল মিডিয়ায় প্রথম তুলেছিলেন। তারই ফলস্বরূপ রাজ্যসভা তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিষয়টির খোলসা হওয়া প্রয়োজন।

অন্যদিকে, বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অভিযোগ করলেই তো হবে না। যারা অভিযোগ করছেন, তারা প্রমাণ দিন। পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, অভিযোগ করলেই তা প্রমাণ হয় না। সারবত্তা থাকলে মানুষের সামনে আনুন, অভিযোগ করে প্রচারের আলোয় এনে প্রচারের আলো টানতে চাইছেন।

তৃণমূল এর আগে আগে কোচবিহারের সাংসদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। এবার প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো রিপুন বরার চিঠি টুইট করে একই প্রশ্ন তুলেছেন ব্রাত্য বসু। বিষয়টিকে লজ্জাজনক বলে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু টুইটে লিখেছেন, ‘ঠিক প্রশ্নই করেছেন রাজ্যসভার সাংসদ রিপুন বরা। একাধিক সংবাদ মাধ্যমের দাবি, নিশীথ প্রামাণিক বাংলাদেশের নাগরিক। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগের আগে কি তার কোনও তথ্য যাচাই হয়নি? ভুললে চলবে না তার বিরুদ্ধে থাকা একাধিক ফৌজদারি মামলার বিষয়টিও।’

এর আগে বিজেপি নেতা তথা ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বাংলাদেশের নাগরিক কি না, এ নিয়ে অতীতেও তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক হয়েছিল। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সে বক্তব্য জোরালোভাবে অস্বীকার করার পর বিতর্কের আপাতত অবসান হলেও এখন নতুন করে একই ধরনের অভিযাগের মুখে পড়েছেন কোচবিহারের এমপি তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-র ‘ডেপুটি’ নিশীথ প্রামাণিক।

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রদবদলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অমিত শাহর ডেপুটি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় নিশীথ প্রামাণিককে। এত গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় তুঙ্গে রাজনীতি। তবে বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.