১৮ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি আগুন, ভবনে ফাটল

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ফুডস ফ্যাক্টরির আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। প্রায় ১৮ ঘণ্টা ধরে আগুন জ্বলছে। ঘটনাস্থলে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ১৮টি ইউনিট।

আজ শুক্রবার (৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাসেল শিকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে নিখোঁজ শ্রমিকদের খোঁজ করতে এসে ভিড় করা স্বজনদের সরাতে পুলিশ ধাওয়া দিলে সংঘর্ষ বেধে যায়। দু’পক্ষের সংঘর্ষ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। ইতোমধ্যে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে, এদিকে স্বজনরাও ইট পাটকেল ছুড়ে মেরেছেন।

কাঞ্চন ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ শাহ-আলম বলেন, মধ্যরাতে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসলেও সকাল ৬টার দিকে কারখানার চারতলায় আবারও আগুন বাড়তে থাকে। আগুন নিয়ন্ত্রণের আগ পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট।

এ রিপোর্ট লেখার সময় কারখানার চারতলায় আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। আগুনের লেলিহান শিখা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। শুক্রবার সকাল থেকে কারখানার সামনে হতাহত ও নিখোঁজ স্বজনদের আহাজারি করতে দেখা গেছে। অনেক শ্রমিক এখনও ওই ভবনের ভেতরে আটকা রয়েছেন বলে জানিয়েছেন শ্রমিক ও নিখোঁজের স্বজনরা। আগুনে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তারা হলেন, স্বপ্না আক্তার (৪৫), মীনা আক্তার (৪১) ও মোরসালিন (২৮)।

নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ৬ তলা ভবনটির চতুর্থ তলার শ্রমিকরা কেউ বের হতে পারেনি। সিকিউরিটি ইনচার্জ ৪ তলার কেচি গেটটি বন্ধ করে রাখায় কোনো শ্রমিকই বের হতে পারেননি। চারতলায় ৭০-৮০ জন শ্রমিক কাজ করতেন। চতুর্থ তলার শ্রমিকদের ইনচার্জ মাহবুব, সুফিয়া, তাকিয়া, আমেনা, রাহিমা, রিপন, চম্পা রানী, নাজমুল, মাহমুদ, ওমরিতা, মহিউদ্দিন, তাছলিমাসহ প্রায় ৭০-৮০ জন শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজনরা ফ্যাক্টরির সামনে এসে ভিড় জমান প্রিয়জনের সন্ধানে।

নিখোঁজদের স্বজনরা অভিযোগ করে জানান, কর্তৃপক্ষের অবহেলায় কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। কারখানায় আগুন লাগার পরও কর্তৃপক্ষ কেচি গেটের তালা না খোলায় শ্রমিকরা বের হতে পারেননি।

এর আগে বৃহস্পতিবার (০৮ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কর্ণগোপ এলাকায় হাশেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ কারখানায় এ আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। রাত ৮টার দিকে ফায়ার সার্ভিস জানায়, সাত তলা ভবনের ছয় তলা পর্যন্ত আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। ভবনে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধার কাজ শুরু করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এ ঘটনায় আহত ১৫ শ্রমিককে স্থানীয় ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা আব্দুল আল আরিফিন।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.