‘মানবদেহে করোনা সংক্রমণ পশুর দেহ থেকে’

মহামারি করোনা ভাইরাস তাণ্ডবে বিপর্যস্ত বিশ্ব। অথচ এ ভাইরাসের উৎস সম্পর্কে এখনো সঠিক কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। নানা মতের পর সবশেষ আবারও সেই পশুর শরীর থেকেই মানুষের শরীরে করোনা ভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছ একটি গবেষণায়।

চীনের উহান থেকে প্রথমে মানব শরীরে এর সংক্রমণ ধরা পড়ে। পরে তা স্থানীয় অধিবাসীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। উহান বুনো ও সামুদ্রিক প্রাণীর বাজার হিসেবে বিখ্যাত। গবেষকরা তাদের সদ্য প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলেছেন, কোভিড ১৯ মহামারির কারণ সম্ভবত এসব প্রাণীর শরীরে থেকেই শুরু হয়েছে।

বুধবার (০৭ জুলাই) এডওয়ার্ড হোমস, অ্যান্ড্রু রামবাটসহ ১৯ জন গবেষক তাদের প্রাপ্ত বিভিন্ন উপাত্ত পর্যালোচনা করে মহামারিটির উৎস হিসেবে প্রাণীদেহকেই চিহ্নিত করেছেন। তারা প্রাণীদেহ থেকে করোনা ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার সহজ রুট হিসেবে মানব শরীরকেই বেছে নিয়েছে।

বুধবার গবেষণাপত্রটি একটি জার্নালে প্রকাশের জন্যে জমা দেওয়ার আগে গবেষকদের একজন বলেন, এতে সার্স-কোভিড-২ এর জেনেটিক স্বাক্ষর, প্রারম্ভিক মহামারি ও উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির গবেষণার বিশদ ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।

কোভিডের উদ্ভব বিষয়ে দুটি পরস্পরবিরোধী ধারণা রয়েছে। এর একটি হলো, পরীক্ষাগার থেকে কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত পশু বা পাখির পালিয়ে যাওয়া। নোবেলপুরস্কার বিজয়ী বিজ্ঞানী পিটার ডোহার্টি ও ওয়েলকাম ট্রাস্টের পরিচালক জেরেমি ফ্যারার বলেছেন, ল্যাবরেটরিতে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের উৎপত্তির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে এ নিয়ে সন্দেহটা দেখা দিয়েছিল এই কারণে যে, ওই শহরটিতে জৈব নিরাপত্তাবিষয়ক বিভিন্ন গবেষণাগার রয়েছে, যেগুলো ইবোলাসহ নানা মারাত্মক রোগের উৎপত্তি নিয়ে গবেষণা করে।

তারা বলেন, গবেষণাগারে দুর্ঘটনাবিষয়ক তত্ত্বটি পুরোপুরি বাদ দেওয়া না গেলেও উহানে বন্যপ্রাণীর বিভিন্ন বাজার থেকে করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি। কারণ সেখানে বন্যপ্রাণী ও মানব শরীরের সরাসরি সংস্পর্শ ঘটে।

গবেষকরা লিখেছেন, ভাইরাসটির উৎস সম্পর্কে আমাদের বোঝা ও অনুসন্ধানের ব্যর্থতা ভবিষ্যতে বিশ্বকে আরো মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেবে। যেমন এখনও আমরা করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি ও বিকাশ নিয়ে ভুলভাবে অগ্রসর হচ্ছি।

তাদের মতে, উহান চীনের বৃহত্তম পশুবাজার। এটি একটি পর্যটন কেন্দ্রও। প্রতিবছর প্রচুর মানুষ এখানে এসে থাকে। ফলে তাদের মধ্যে অনেকে বুনো বা সামুদ্রিক প্রাণিখাদ্যের ব্যাপারে আগ্রহী হয়। সুতরাং এখান থেকে যে কোনো অজ্ঞাত রোগ ছড়িয়ে পড়াটা অসম্ভব কোনো বিষয় নয়।

সূত্র: এনডিটিভি।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.