ঘরের কোন জায়গা কতদিন পরপর পরিষ্কার করবেন

করোনার এই ভয়াবহ পরিস্থিতে নিজে ও পরিবারের সবার সুস্থ থাকা খুব বেশি জরুরি। এসময় নিজের সঙ্গে সঙ্গে ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখার বিকল্প নেই। আমাদের বসবাসের ঘরটির প্রতিটা কোণে কি পরিমাণ ব্যাকটেরিয়া আর ভাইরাসে ভরা তা জানলে আপনিও আঁতকে উঠবেন!

যদি একবার মাইক্রোস্কোপ দিয়ে দেখতেন তবে বুঝতেন প্রতিটা কোণে কি পরিমাণ ব্যাকটেরিয়া আর ভাইরাসে ভরা। তাই ঘরের শুধুমাত্র মেঝেই নয়, পরিষ্কার রাখতে হবে ঘরের প্রতিটি কোণ এবং বস্তু।

অনেকেই আছেন প্রতিদিন ঘরবাড়ি পরিষ্কার করেন আবার অনেকেই সময় পান না। কিন্তু এক থেকে দুই সপ্তাহ পরপর এগুলো ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করা উচিৎ। আর বাড়িতে যদি পোষা প্রাণী থাকে সেক্ষেত্রে প্রতি সপ্তাহে পরিষ্কার করুন। ভ্যাকুয়াম ক্লিনার না থাকলে ঝাড়ু দিয়ে হলেও পরিষ্কার করুন। তবে সুস্থ থাকতে চাইলে সময় করে হলেও কিছু কিছু জায়গা পরিষ্কার করা জরুরি।

দরজার হাতল ও নব
প্রতিদিনই আমাদের কোন না কোন কাজে বাইরে বের হতে হয়। আর বাইরে বের হওয়ার সময় আমাদের দরজার হাতল বা নব স্পর্শ করতেই হয়। কিন্তু পুরো বাসা ঝকঝক করলেও আমরা দরজার হাতল, নব ইত্যাদি পরিষ্কারের কথা ভুলে যাই। অথচ এগুলোও কিন্তু জীবাণুর আধার। বিশেষ করে বাড়ির প্রধান দরজা, বাথরুম ও রান্নাঘরের দরজা। তাই সপ্তাহে অন্তত একদিন এগুলো জীবাণুনাশক ব্যবহার করে মুছে ফেলতে হবে।

চাদর এবং বালিশের কভার
অনেকেই বিছানার চাদর, বালিশের কভার বা পর্দা জাতীয় জিনিস অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার করেন না। বিশেষ করে বিছানার চাদর ও বালিশের কভারে ঘাম, তেল, খুশকি ইত্যাদি মিশে অনেক বেশি নোংরা হয়। তাই এই জাতীয় জিনিসগুলো অন্তত দুই সপ্তাহ অন্তর অন্তর পরিষ্কার করা উচিৎ।

তোয়ালে
গা মোছার কাজে ব্যবহৃত গামছা বা তোয়ালে ভেজা থাকলে স্ট্যাফ এবং ফেক্যাল ধরণের ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। এছাড়াও রান্নাঘরের তোয়ালেতেও নানারকম ব্যাকটেরিয়া জন্মায়। তাই প্রতি সপ্তাহে একদিন এগুলো গরম পানি দিয়ে জীবাণুনাশক ব্যবহার করে ধুতে হবে। আর যদি কাঁচা মাছ মাংস ধরে হাত মোছেন, তাহলে সেদিনই ধুয়ে ফেলতে হবে।

কার্পেট, পাপোষ
এক থেকে দুই সপ্তাহ পরপর এগুলো ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করা উচিৎ। আর বাড়িতে যদি পোষা প্রাণী থাকে সেক্ষেত্রে প্রতি সপ্তাহে পরিষ্কার করুন। ভ্যাকুয়াম ক্লিনার না থাকলে খোলা জায়গায় রোদে দিয়ে ঝাড়ু দিয়ে হলেও পরিষ্কার করুন। আর সেই সঙ্গে গরম পানি ও জীবাণুমুক্তকরন মিশিয়ে ওই জায়গার মেঝে মুখে ফেলুন।

বেসিন ও সিংক
বাসায় সব থেকে বেশি নোংরা হয় বেসিন আর সিংক। কারণ সকলেরই সকাল, দুপুর, বিকেল ব্যবহার করতে হয়। সব থেকে বেশি ব্যবহার হয় বলেই নোংরাও হয় বেশি। যেমন দাঁত ব্রাশ, মুখ ধোয়া, হাত ধোয়ার কাজে ব্যবহৃত হয় বেসিন। আর রান্নাঘরের সিংকে থালাবাসন ও খাবার জিনিস ধোয়ার কারণে এখানে ময়লা, খাদ্যকনার পাশাপাশি তেল ও নানারকম জীবাণু লেগে থাকে। তাই প্রতিদিনই একবার করে এগুলো পরিষ্কার করুন। বিশেষ করে সিংকে কাঁচা মাছ বা মাংস ধোয়ার পর অবশ্যই ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করুন।

বাসন মাজার স্পঞ্জ
একটি বাসন মাজার স্পঞ্জের প্রতি স্কয়ার ইঞ্চি জায়গায় কোটি কোটি ব্যাকটেরিয়া থাকবে। তবে এর সবগুলোই যে ক্ষতিকর, তা না। শুধু সাবান আর পানি দিয়ে ধোয়া তাই নিরাপদ না। স্পঞ্জগুলো সাধারণত ফুটন্ত পানিতে অন্তত দুই মিনিট ধরে ডুবিয়ে রেখে ধুতে হবে।

বাথরুম
ঘরের এই জায়গায় সবচেয়ে বেশি ব্যাকটেরিয়া থাকে বলেই সকলের ধারনা। তাই সপ্তাহে একদিন বাথরুম পরিষ্কার করুন। বাথরুমের সিংক এবং টয়লেটের ছয় ফিট নীচ পর্যন্ত ই.কোলি নামক ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। তাই সপ্তাহে একদিন এগুলোতে জীবাণুমুক্তরন ছেটাতে হবে। এছাড়াও বাথরুমের শাওয়ারের পর্দা ও বাথটাবও অন্তত দুই সপ্তাহ পরপর ডিপ ক্লিন করুন।

অর্থসূচক/এনজেএস/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.