জার্মানিতে প্রথমবারের মতো রপ্তানি হলো জাতীয় ফল কাঁঠাল

বাংলাদেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল এখন ইউরোপের সমৃদ্ধ দেশ জার্মানির বাজারে। জার্মানির রাজধানী বার্লিনে অবস্থিত “দেশি বাজার লেবেন্সমিট্টেলমার্ক্ট” বাংলাদেশ থেকে এই ফল আমদানি করেছে। আর বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান Globepac Foods & Beverage এই ফল জার্মানিতে রপ্তানি করার কৃতিত্ব অর্জন করেছে। বাংলাদেশ থেকে জার্মানিতে কাঁঠাল রপ্তানি করার ঘটনা এটিই প্রথম।

জার্মানিতে কাঁঠাল রপ্তানির মধ্য দিয়ে ইউরোপের বাজারে জাতীয় ফল রপ্তানির সম্ভাবনা আরও বেড়েছে। একই সাথে বেড়েছে এই ফলের মর্যাদা।

লেবেন্সমিট্টেলমার্ক্ট অবশ্য আঁঠালের পাশাপাশি আমও আমদানি করেছে বাংলাদেশ থেকে। এ বিষয়ে লেবেন্সমিট্টেলমার্ক্ট এর পরিচালক শামস উদ্দিন মোহাম্মদ সজীব বলেন, “আম ও কাঠাল আমদানির মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশের সাথে সরাসরি ব্যবসার যাত্রা শুরু করলাম। বার্লিনের কোনো ব্যবসায়ী বাংলাদেশ থেকে সরাসরি ফল বা সবজি পূর্বে কখনো আমদানি করেনি। বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর স্যারের পরামর্শে আমদানি শুরু করেছি। ইতিমধ্যে ব্যাপক সাড়া পেয়েছে এবং প্রথম দিনেই প্রায় সব আম বিক্রি হয়ে গেছে।”

বাংলাদেশের রপ্তানীকারক Globepac Foods & Beverage এর উপদেষ্টা আমিনুল হক অর্থসূচককে বলেন, “ইউরোপের বাজারে বিশেষ করে ইংল্যান্ড, ইতালি এবং ফ্রান্সে শাকসবজি ও আম রপ্তানি হলেও জার্মানিতে আমাদের রপ্তানি ছিল না। প্রথমবার বার্লিনে রপ্তানি করতে পেরে খুবই ভালো লাগছে।”

তিনি জানান, কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ের মাধ্যমে আম ও কাঠাল সংগ্রহ করে বিশেষ প্রক্রিয়ায় প্যাকেটিংয়ের মাধ্যমে রপ্তানি করা হয়।

তিনি বলেন, শুধু জার্মানি নয়, ইউরোপের অন্যান্য দেশে বাংলাদেশী ফল রপ্তানির বিশাল সম্ভাবনা আছে। কন্ট্রাক্ট ফার্মিং সংক্রান্ত সুস্পষ্ট ও সময়োপযোগী নীতিমালা প্রণয়ন, সরকারের পতিত জমিগুলো রপ্তানিকারকদের কাছে দীর্ঘ মেয়াদে লিজ দেওয়া, রপ্তানি সংশ্লিষ্ট বিমানভাড়া কমানো, বিমানবন্দরে ফল ও কৃষি পণ্য হ্যান্ডলিংয়ের জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতির সংস্থান, এয়ারপোর্টে আধুনিক হিমাগার স্থাপনের মতো কিছু ব্যবস্থা নেওয়া গেলে এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো সম্ভব।

বার্লিনস্থ বাংলাদেশ মিশনের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, “এই মুহূর্তে মূলত এশিয়ান কিংবা দেশীয় বাজারের দিকটা লক্ষ করে এই রপ্তানি প্রক্রিয়া শুরু হলেও আমাদের মূল লক্ষ্য ইউরোপীয় বাজারে প্রবেশ করা। ইতিমধ্যে আমরা জার্মান এগ্রো বিজনেস অ্যালায়েন্সের সাথে যৌথভাবে গ্লোবাল গ্যাপ সার্টিফিকেটের উপর অনলাইনে একটি ‘বিশেষ অবহিতকরণ কর্মশালা’ আয়োজন করেছি। যেখানে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৪০ জন ব্যবসায়ী অংশগ্রহণ করেছে। ইউরোপের বাজারে প্রবেশের মূল শর্ত পণ্যের গুণগত মান এবং সার্টিফিকেশন। আমরা আশা করছি বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা সকল শর্ত পূরণ করে ইউরোপের বাজার ধরতে সক্ষম হবে।”

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.