‘করোনার দ্বিতীয় ঢেওয়ে অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা বাড়ছে’

করোনাভাইরাস অতিমারির দ্বিতীয় ঢেওয়ে দেশের অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। মানুষের জীবন ও জীবিকা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

দেশে ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের সবচেয়ে পুরনো সংগঠন মেট্রপলিট্যান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) এর ত্রৈমাসিক প্রকাশনার (জানুয়ারি’২১-মার্চ’২১) সম্পাদকীয়তে এ কথা বলা হয়েছে।

অর্থনৈতিক পর্যালোচনা সংক্রান্ত এই প্রকাশনায় বলা হয়, করোনাভাইরাস অতিমারিতে বিশ্বজুড়ে লকডাউন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে স্থবিরতা ও দেশে করোনার প্রথম ঢেওয়ে মোকাবেলায় ঘোষিত টানা ৬৬ দিনের লকডাউনে দেশের অর্থনীতি ও জনজীবন যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে প্রান্তিক মানুষের আর্থিক ও সামাজিক জীবন আরও নাজুক হয়েছে।

সরকারের নানা প্রণোদনা, করোনায় নতুন সংক্রমণে নিম্নধারা, টিকাদান কর্মসূচি এবং অতিমারি নিয়ে মানুষের ভয় কমে আসতে থাকায় ধীরে ধীরে অর্থনীতির পুনরুদ্ধার শুরু হয়।

সম্পাদকীয়তে বলা হয়, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২১-মার্চ’২১) অর্থনীতিতে পুনরুদ্ধারের জোরালো আভাস দেখা যায়। সরকারের প্রণোদনা কর্মসূচির কারণে এমএমই থেকে শুরু করে বৃহৎ শিল্প-সব প্রতিষ্ঠানই ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে। দেশের অর্থনীতির প্রধান দুই চালিকা শক্তি- রপ্তানি আয় ও প্রবাসী আয়ে (Remittance) ভাল গতি ছিল আলোচিত প্রান্তিকে। প্রবাসী আয়ের ধারা গ্রামীণ অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার এবং অভ্যন্তরীন চাহিদা স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করে, যা সামগ্রিক অর্থনীতি, বিশেষ করে ক্ষুদ্র শিল্প ও এসএমই খাতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এ সময়ে মূল্যস্ফীতি ছিল নিয়ন্ত্রণে। বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ ছিল সন্তুষজনক। বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার ছিল স্থিতিশীল।

তবে আলোচিত প্রান্তিকে অর্থনীতির কয়েকটি সূচকে বেশ দূর্বলতাও ছিল। এ সময়ে রাজস্ব আহরণ এবং সরকারি ব্যয়ে প্রত্যাশিত গতি ছিল না। বেকারত্ব এবং স্বল্প বিনিয়োগ ছিল একটি চ্যালেঞ্জ।

এমন পরিস্থিতিতে অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে দেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেও আঘাত হানতে শুরু করেছে। দেশের অর্থনীতিতে যখন পূর্ণ গতিতে পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু হবে, ঠিক তখন আমাদের ফের লকডাউনে যেতে হয়েছে। জীবন ও জীবিকা ফের ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি অর্থনীতিতেও দেখা দিয়েছে নতুন অনিশ্চয়তা।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.