‘বিএনপি কখন আবার বজ্রপাতে মৃত্যুর জন্য সরকারকে দায়ী করে’

বিএনপি সবকিছুতে সরকারের দোষ খোঁজে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমি মাঝে মাঝে ভাবি- যে হারে বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। তারা (বিএনপি) আবার নাকি বলে যে এজন্য আওয়ামী লীগই দায়ী। কখন আবার বজ্রপাতে মৃত্যুর জন্য শেখ হাসিনার সরকারকে দায়ী করে।

তিনি বলেন, সেটাই আমি ভাবছি। এটাও তারা করবে। ঘূর্ণিঝড় আসার সময় বলেছিল, সরকারের জন্য ঘূর্ণিঝড় হয়েছিল। বস্তিতে আগুন লেগেছে, সেটার জন্যও আওয়ামী লীগকে দায়ী করে। আমরা আগুন লাগিয়ে মানুষের দুর্ভোগের সৃষ্টি কেন করবো? আগুন সন্ত্রাসতো তাদের ব্যাপার।

আজ মঙ্গলবার (০৮ জুন) আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে করোনার সুরক্ষার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি মহাসচিব এখন আবার নতুন করে আন্দোলনের হাঁকডাক শুরু করেছেন। এখন আন্দোলনটা কোন বছর হবে? দেখতে দেখতে ১২ বছর। আন্দোলন হবে কোন বছর? একবার বলে এসএসসি পরীক্ষা, আবার বলে এইচএসসি পরীক্ষার পরে। আবার বলে রোজার ঈদের পরে কিংবা কোরবানির ঈদের পরে। কত ঈদ ও পরীক্ষা চলে গেল কিন্তু বিএনপির আন্দোলনতো চোখে পড়েনি।

‘এখন আবার গণঅভ্যুত্থান করবে। এ দেশে ’৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল, পরে গণআন্দোলন হয়েছে। তারা ’৬৯ এর পর আবার গণঅভ্যুত্থান দেখাবে, ১২ বছর ধরে দেখাচ্ছে। কখন দেখবো আল্লাহ মাবুদ জানে।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি নির্বাচন বয়কট করে ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। তারা আবারও আগুন সন্ত্রাসের পথে হাঁটছে। আন্দোলনের নামে সহিংস কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হলে আওয়ামী লীগ সমুচিত জবাব দেবে রাজপথে।

তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রথম ঢেউ মোকাবিলার পরে এখন দ্বিতীয় ঢেউয়ে আমরা ভালো অবস্থানে রয়েছি। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের সীমান্ত এলাকাগুলোতে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। প্রাণহানী বাড়ছে। এই অবস্থায় পরিস্থিতি স্থিতিশীল, এ কথা বলা যায় না। সংক্রমণ কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। মৃত্যু ৩০, ৩৫ বা ৪০’র কোটায় রয়েছে। তাও বলা যায় না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনা ভাইরাস আমাদের নিয়ন্ত্রণেই চলে এসেছিল। কিন্তু হঠাৎ করে বেড়ে যায়। আসলে করোনা আনপ্রেডিক্টেবল। কখন যে কোন দিকে মোড় নেবে বলা মুশকিল। কাজেই আমাদের সবসময়ই সতর্ক থাকতে হবে।

তিনি বলেন, ভারত তাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে করোনা টিকা দিতে পারছে না। তারপরও অন্যান্য সোর্স থেকে সংগ্রহ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর চেষ্টার কোনো কমতি নেই। ইনশাআল্লাহ, অন্যান্য দেশ থেকে সময়মতো টিকা সংগ্রহ করতে পারবো। সেই ব্যাপারে সরকার সর্বাত্মক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। টিকার সংকট নিয়ে বিরোধীদল যেটা বলে আসছে সেটা এখানে সৃষ্টি হবে না।

কাদের বলেন, রাজশাহীতে করোনা পরিস্থিতি খারাপ রূপ নিয়েছে। সেখানে হাসপাতালে অক্সিজেনের এবং বেডের কিছুটা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সরকার সেটা সরবারাহ করছে। এখনও ভারতে যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল, সেই অবস্থার কারণ আমাদের সৃষ্টি হয় নাই। কারণ প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন। তিনি ঝড়ের সময়ও যথাযথ প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। করোনা আরও ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে এটা তার মাথায় আছে। এজন্য তিনি সব বিষয়ে যথাযথ নজর রাখছেন এবং ব্যবস্থা নিচ্ছেন। যেসব জায়গায় সংক্রমণ বেশি, সেখানে আঞ্চলিক লকডাউন দিচ্ছেন।

তিনি বলেন, করোনা বিষয়ে সরকারের সচেতনতা এবং সতর্কতা নিয়ে যারা প্রশ্ন করেন। তারা বিরোধিতার খাতিরেই বিরোধিতা করেন। বাজেটও বরাদ্দ রাখা হয়েছে। প্রণোদনা প্যাকেজগুলো দেওয়া হলো। এই টাকা কোথায় থেকে আসছে? এটা কি বিরোধী দল দিচ্ছে? এটাতো সরকারি কোষাগার থেকে জনগণকে দিচ্ছে সরকারই। আমরা প্রথম ঢেউ অতিক্রম করেছি, দ্বিতীয় ঢেউও অতিক্রম করতে চলেছি।

আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি ফিলিস্তিনে ওষুধ পাঠিয়েছে বলে আমরা শুনেছি। তাদের তো কতগুলো ওষুধ কোম্পানি রয়েছে। তারা অভাবে আছে তাতো না। খুবই বড় বড় ওষুধ কোম্পানি আছে। তারাতো এই সময়ে করোনা চিকিৎসা সামগ্রী সরবারাহ করতে পারেন।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.