দেশে কিশোর গ্যাংয়ের অস্তিত্ব থাকবে না: র‌্যাব ডিজি

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের (ডিজি) মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, অপরাধ দমনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সক্ষমতা রয়েছে। ইতিবাচক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাসমূহ অপরাধ দমনে কাজ করছে। দেশে কিশোর গ্যাংয়ের অস্তিত্ব থাকবে না।

তিনি বলেন, অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের র‌্যাব গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসছে। কিশোর গ্যাংয়ের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কোনো রাজনৈতিক চাপ নেই।

আজ শনিবার (০৫ জুন) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওস্থ জাতীয় চলচিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (এফডিসি) ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে ‘কিশোর অপরাধ বৃদ্ধিতে সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার’ শীর্ষক ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে র‌্যাব মহাপরিচালক এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, টিকটকসহ কয়েকটি ডিজিটাল অ্যাপস ব্যবহারের মাধ্যমে অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে। এজন্য ক্ষতিকর অ্যাপসগুলো বন্ধ করার বিষয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি পর্যালোচনা করছে।

তিনি বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে অপরাধে জড়ানোদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। তবে বর্তমান প্রযুক্তিনির্ভর সমাজে প্রযুক্তি বর্জন করা নয় বরং ইতিবাচকভাবে প্রযুক্তির ব্যবহার করে আমাদের জীবনমান উন্নয়নে করতে হবে।

র‌্যাব মহাপরিচালক আরও বলেন, কিশোর অপরাধ হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে। এরমধ্যে পারিবারিক ও সামাজিক কারণ রয়েছে, টিকটকসহ বিভিন্ন কারণও রয়েছে। আজকের এই অবস্থার দায় সবার। সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করলে এই কিশোর অপরাধ কমানো সম্ভব।

আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, কোনো অপরাধ সংঘটনের পর আসামি ধরা হয়নি এর নজির র‍্যাবে নেই। সকল অপরাধের পর আসামি ধরতে র‍্যাব সদা তৎপর। র‍্যাবের হেডকোয়ার্টার্স থেকে সরাসরি আসামি ধরার জন্য কাজ করে থাকে এবং হেডকোয়ার্টার্স ও ব্যাটালিয়ন কে, কার আগে আসামি ধরবে এই নিয়ে প্রতিযোগিতা আছে। ঠিক অনুরূপভাবে বাংলাদেশ পুলিশের জেলা পুলিশ, ডিবি, সিআইডি, পিবিআই রয়েছে তাদের মধ্যে আসামি ধরার জন্য ইতিবাচক একটি পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বর্তমানে অপরাধ করে পার পাওয়ার সুযোগ নেই। এটা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য একটি ইতিবাচক দিক বলেও দাবি করেন র‍্যাব ডিজি।

র‌্যাব মহাপরিচালক আরও বলেন, কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি অভিভাবক ও শিক্ষকসহ সমাজের বিভিন্ন পেশার মানুষকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। বিশেষত পরিবারে সন্তানদের প্রতি বাবা-মায়ের নজরদারি বাড়াতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। সৃজনশীল কাজে সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে কিশোর অপরাধ হ্রাস করা সম্ভব।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছি। অনেক দেশের চাইতে আমরা পার ক্যাপিটাল ইনকামে এগিয়ে রয়েছি। নারী উন্নয়নে আমরা এগিয়ে রয়েছি। ইন্টারনেটে সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রণে দেশে আইন রয়েছে। সেই আইনে অপরাধীদের গ্রেফতারের পর বিচার হচ্ছে।

প্রতিযোগিতায় ঢাকার শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজকে পরাজিত করে নরসিংদীর আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজের বিতার্কিকরা চ্যাম্পিয়ন হয়।

প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন- ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক লিটন হায়দার, আব্দুল্লাহ তুহিন, কাওসার সোহেলী, প্রাক্তন বিতার্কিক মেহেদী হাসান তামিম।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন র‌্যাব-২ এর পরিচালক লে. কর্নেল খন্দকার সাইফুল আলম এবং র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং-এর পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলের মাঝে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.