করপোরেট কর কমলেও ব্যবসার ব্যয় বাড়বেঃ আইসিএবি

আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের ঘোষিত বাজেটে করপোরেট কর কমানোর প্রস্তাব করা হলেও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলো লাভবান হবে না। কারণ একই সঙ্গে সরবরাহ পর্যায়ে ন্যুনতম কর হিসেবে বিবেচিত উৎসে আয়কর বাড়ানোর প্রস্তাব করায় ব্যবসায়ের প্রকৃত ব্যয় বাড়বে। তাই এই উৎসে আয়কর যৌক্তিক করা না হলে করপোরেট কর কমানোর সুফল পাবে না প্রতিষ্ঠানগুলো। উল্টো তাদের দায় বাড়বে। এতে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনরুজ্জীবন ও নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য ব্যাহত হবে।

বাজেট প্রতিক্রিয়া জানানোর লক্ষ্যে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই মতামত তুলে ধরেছে পেশাদার হিসাববিদদের সংগঠন ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস, বাংলাদেশ।

আজ শনিবার (৫ জুন) ডিজিটাল প্ল্যাটফরমের মাধ্যমে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন-আইসিএবির প্রেসিডেন্ট মাহমুদ উল হাসান খসরু এফসিএ। দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কাউন্সিল সদস্য মো: শাহাদাৎ হোসেন এফসিএ ও  এবং স্নেহাশীষ বড়ুয়া এফসিএ। সঞ্চালনা করেন সাবেক সভাপতি মো: হুমায়ুন কবীর এফসিএ। মাহমুদউল হাসান খসরু এফসিএ এবং মো: হুমায়ুন কবীর এফসিএ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। আইসিএবি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট সিদ্ধার্থ বড়ুয়া এফসিএ সমাপনী বক্তব্য রাখেন।

আইসিএবি স্থানীয় শিল্পের বিকাশে কর অবকাশ সুবিধা ও ভ্যাট অব্যাহতির প্রস্তাবকে ইতিবাচক উদ্যোগ হিসেবে অভিহিত করেছে। পাশাপাশি এই সুবিধার অপব্যাবহার রোধ বা কাঙ্খিত ফল পেতে ন্যুনতম মূল্য সংযোজনের শর্ত আরোপ এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কার্যকর মনিটরিংয়ের তাগিদ দিয়েছে।

বাজেটে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর বৃদ্ধির প্রস্তাব আর্থিক অন্তর্ভূক্তিকে (Financial Inclusion) ব্যাহত করবে বলে মনে করছে আইসিএবি। এ বিষয়ে তারা বলেছে, এমএফএস সেবা ব্যবহারকারীদের মধ্যে নিম্ন বিত্তের মানুষ বেশী। ফলে এই খাতের করভার দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ফাইনান্সিয়াল ইক্লুশনে বাধা হয়ে যাবে যা সামগ্রিক ডিজিটালাইজেশনের জন্যই একটি নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করতে পারে। আইসিএবি মনে করে, চলমান কোভিডের সময়ে গ্রাহককে আরও বেশি এমএফএস সেবার প্রতি আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে এই কর বৃদ্ধি প্রস্তাব প্রত্যাহার করা প্রয়োজন, যাতে ক্যাশলেস সমাজ প্রতিষ্ঠা করা যায়।

সামাজিক সুরক্ষা খাতের বরাদ্দ অপ্রতুল অভিহিত করে এই খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে আইসিএবি। এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য- কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারিতে সাধারণ ছুটি, লকডাউন, উৎপাদনমূখী প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ীক কার্যক্রম বিভিন্ন সময় বন্ধ থাকার কারণে দেশের বিপুল জনগোষ্ঠী দারিদ্র্য সীমার নীচে নেমে গেছে। এ বাস্তবতায় সামাজিক সুরক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ অপ্রতুল।

কোনো প্রতিষ্ঠান তার মোট কর্মচারীর ১০ শতাংশ বা ১০০ জনের বেশি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষকে নিয়োগ দিলে ওই কর্মচারীদের পরিশোধিত বেতনের ৭৫ শতাংশ বা প্রদেয় করের ৫ শতাংশ নিয়োগকারীকে কর রেয়াত হিসেবে প্রদান করার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে আইসিএবি। তবে এত অধিক সংখ্যক তৃতীয় লিঙ্গের মানুষকে নিয়োগ দেওয়ার মতো প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা একেবারে নগন্য উল্লেখ করে সংখ্যাটি কমিয়ে বাস্তবসম্মত করার সুপারিশ করেছে তারা।

 

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.