বাংলাদেশে প্রথম জিই’র গ্যাস টারবাইন স্থাপনা করছে সামিট

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সামিট বদ্ধপরিকর। সেই লক্ষ্যে ঢাকার অদূরে নির্মাণাধীন সামিট মেঘনাঘাট-২ পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্পে সামিট নিয়ে এসেছে জিই’র সর্বাধুনিক ৯এইচএ.০১ হেভি-ডিউটি গ্যাস টারবাইন।

প্রকল্পকাল মাফিক গ্যাস টারবাইনটি প্ল্যান্টের ভিত্তিতে সফলভাবে স্থাপনা করা শুরু হয়েছে, যা ২০২২ সাল নাগাদ চালু হলে দেশের সাত লক্ষ গৃহস্থালির বিদ্যুতের প্রয়োজন মেটানোর মত বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হবে।

সামিট গ্রুপ অব কোম্পানিজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান বলেন, এখনো মাথাপিছু বিদ্যুৎ ব্যবহারে বাংলাদেশ ভারতীয়-উপমহাদেশের মধ্যে অনেক পিছিয়ে, যদিও বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি বৃদ্ধির হার এই অঞ্চলে সবচাইতে বেশী। সামিট বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি বেগবানে দেশের মানুষের জন্য প্রাথমিক অবকাঠামো নির্মাণ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো জিই’র সর্বাধুনিক এইচএ (HA) প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাশ্রয়ী এবং নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে আশাবাদী।

সামিট মেঘনাঘাট-২ প্রকল্পটি বাংলাদেশের বেসরকারি বিদ্যুৎ খাতের এযাবৎকালের সর্ববৃহৎ একক বিনিয়োগ।

বর্তমানে জিই’র এইচ-ক্লাস এই সেগমেন্টে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল গ্যাস টারবাইন ফ্লিট। ফ্রান্সের বেলফোর্টে নির্মিত এই জিই ৯এইচএ.০১ গ্যাস টারবাইনটি ৫০-হার্জ সেগমেন্টের কম্বাইন্ড সাইকেলে বিশ্ব রেকর্ডধারী নিট ৬৩.৭ শতাংশ কার্যকরী। এছাড়া টারবাইনটির পূর্ণ জীবনকালে এর মালিকানার মোট খরচ ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে সবচেয়ে সাশ্রয়ী। এই গ্যাস টারবাইনটি স্বল্প জ্বালানিতে অধিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে এবং ইন্ডাস্ট্রিতে লিডিং ফ্লেক্সিবিলিটি প্রদানে সক্ষম। সর্বনিম্ন (নাইট্রোজেন অক্সাইড এবং কার্বন ডাই অক্সাইড) বায়ু নিঃসরণ, মূলধন ব্যয় ও রক্ষণাবেক্ষণের বিরামকাল এবং স্বল্প খরচ ছাড়াও এইচএ টেকনোলজি টেকসই বিদ্যুৎ উৎপাদনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

জিই’র দক্ষিণ এশিয়ার গ্যাস পাওয়ারের সিইও দীপেশ নন্দা বলেন, সবার জন্য বিদ্যুৎ- এই জাতীয় লক্ষ্যে বাংলাদেশের সরকার সক্রিয়ভাবে তার কৌশল নতুনভাবে নির্ধারণ ও উপায় সংজ্ঞায়িত করছে। তিনি আরো বলেন, সামিট গ্রুপের সাথে দীর্ঘমেয়াদী সহযোগী হিসেবে থাকতে পেরে জিই গর্বিত। আগামীতেও জ্বালানি খাতে বিভিন্ন ধরণের সেবা ও সমাধান প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি হওয়ার আকাঙ্ক্ষার যাত্রায় সকল উন্নয়নের প্রতিবন্ধকতা উত্তরণে সহায়তা করতে আমরা প্রতিশ্রতিবদ্ধ। বাংলাদেশে জিই’র একাধিক শক্তিশালী গ্যাস টারবাইন স্থাপনা রয়েছে যা সম্মিলিতভাবে প্রায় তিন গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম।

টার্নকি ইপিসি চুক্তির আওতায় জিই সামিট মেঘনাঘাট-২ পাওয়ার প্ল্যান্টটির জন্য – একটি ৯এইচএ.০১ গ্যাস টারবাইন, একটি থ্রি-প্রেশার লেভেল আরএইচ-রিহিটার ড্রাম টাইপ হিট রিকভারি স্টিম জেনারেটর (এইচআরএসজি), একটি স্টিম টারবাইন, একটি গ্যাস টারবাইন জেনারেটর, একটি স্টিম টারবাইন জেনারেটর, একটি কনডেন্সার এবং আনুষাঙ্গিক সরঞ্জামসহ ব্যালেন্স অব প্ল্যান্ট (বিওপি) সলিউশনস প্রদান করছে। জিই আগামী ২২ বছর পর্যন্ত গ্যাস টারবাইন এবং জেনারেটরের রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতের সেবা প্রদান করবে।

সামিট মেঘনাঘাট-২ প্রকল্পের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রায় এগার শ’রও বেশী শ্রমিক কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির বিবেচনায় সামিট এবং জিই’র সদস্যরা সকলের নিরাপত্তা এবং জাতীয়, স্থানীয় ও কোম্পানির স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে নিশ্চিত করে সফলতার সাথে গ্যাস টারবাইনটির আগমন এবং সংস্থাপনের কাজ করে চলেছে।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.