ভারতে না গিয়েও যশোরে ৮ জন ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত

দেশে করোনা ভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের সামাজিক সংক্রমণ শুরুর আশংকা প্রবল হচ্ছে। এবার সীমান্ত জেলা যশোরে নতুন করে ৮ জনের শরীরে এই ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে, যাদের কেউ-ই ভারতে যাননি। ভারত থেকে ফেরত কারো সংস্পর্শে এসেছিলেন, এমন তথ্যও জানা নেই তাদের।

আলোচিত ব্যক্তিদের মধ্যে ৭ জন পুরুষ ও ১ জন নারী। তাদের নিয়ে যশোরে এখন পর্যন্ত ভারত ফেরত ও স্থানীয় ১৫ জনের দেহে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে এদের নমুনার জিনোম সিকুয়েন্স করা হয়েছিল।

সোমবার রাতে যবিপ্রবি জনসংযোগ দপ্তর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

যবিপ্রবির জিনোম সেন্টারে সোমবার জিনোম সেন্টারের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবীর জাহিদের নেতৃত্বে একদল গবেষক সিকুয়েন্সির মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের ভারতীয় এ ধরণ শনাক্ত করেন। ইতিমধ্যে ভারতীয় ধরণ শনাক্তের বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, আইইডিসিআর, যশোরের স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।

জিনোম সেন্টার থেকে জানানো হয়েছে, গত ২৯ মে ৪ জনের নমুনা অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ৩ জনের নমুনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল এবং অপরজনের নমুনা ঝিকারগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে যবিপ্রবির ল্যাবে পাঠানো হয়।

যবিপ্রবির গবেষক দলটি জানান, ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট নামে পরিচিত ই১.৬১৭.২ নামের ভ্যারিয়েন্টটি জিনোম সেন্টারে শনাক্ত করা হয়েছে। গত ৮ মে যবিপ্রবির ল্যাবে সর্বপ্রথম ২ জন করোনা রোগীর নমুনায় ভারতীয় এ ধরণ শনাক্ত করা হয়। যাশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এখন পর্যন্ত ভারত ফেরত ৫৫০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১২ জনের শরীরে করোনা পজিটিভ পায়।

গত শুক্রবার করোনাভাইরাসের জিন বিশ্লেষণের উন্মুক্ত বৈশ্বিক তথ্যভান্ডার জার্মানির গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটার (জিআইএসএআইডি) ওয়েবসাইটে বাংলাদেশে করোনার ভারতীয় ধরন শনাক্তের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

তাতে নতুন করে ১৩ জনের শরীরে করোনার ভারতীয় ধরন শনাক্ত হয়েছে বলে জানানো হয়। এই ১৩ জনের মধ্যে ৭ জনই চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার। এ ছাড়া খুলনা, পিরোজপুর, বাগেরহাট, ঝিনাইদহ, গাইবান্ধা ও চুয়াডাঙ্গার একজন করে করোনার ভারতীয় ধরনে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাতজনসহ খুলনার একজনের ভারত ভ্রমণের ইতিহাস নেই। এই ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করেছে আইইডিসিআর।

শনিবার আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন গণমাধ্যমকে বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে এমন কিছু মানুষ নতুন স্ট্রেইনে (ভারতীয় ধরন) আক্রান্ত হয়েছেন, যাঁদের ভারত ভ্রমণের ইতিহাস নেই। এটা নতুন স্ট্রেইনের সামাজিক সংক্রমণের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

সোমবার নতুন করে ভারত ভ্রমণের সাথে সম্পর্কবিহীন ৮ জনের দেহে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়ার বিষয়টি এই ভ্যারিয়েন্টের সামাজিক সংক্রমণের আশংকাকে আরও প্রবল করে তুলেছে।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.