শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা: সেই ৭ জনের জামিন চেম্বারে স্থগিত

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ২০০২ সালে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় নিম্ন আদালতে সাজাপ্রাপ্ত সাতজনকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেছেন চেম্বার জজ আদালত।

রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন শুনানি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার (২৭ মে) আপিল বিভাগের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর চেম্বার জজ আদালত এই আদেশ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন আদেশের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, জামিন স্থগিত ও বাতিল চেয়ে করা আবেদনের বিষয়ে আজ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে শুনানি নিয়ে বিচারক এই আদেশ দেন।

এর আগে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করা হয়েছিল।

গত মঙ্গলবার (২৫ মে) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই ৭ আসামিকে চার মাসের জামিন দেন। এই সময়ের মধ্যে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আসামিদের করা আপিল নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে।

জামিন পাওয়া আসামিদের মধ্যে আছেন সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার। অন্যরা হলেন- গোলাম রসুল, আব্দুস সামাদ, জহিরুল ইসলাম, রাকিব, শাহাবুদ্দিন ও মনিরুল ইসলাম। আবেদন করা বাকি ১১ আসামির জামিনের আদেশের জন্য আগামী রোববার (৩০ মে) দিন ধার্য করেছেন আদালত।

২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে যশোর-সাতক্ষীরা সড়কে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। ওইদিনই কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন বাদী হয়ে হত্যাচেষ্টার মামলা করেন।

এ মামলায় তদন্ত শেষে সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলামসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়, শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা হয়েছে। এরপর মামলার আসামি রাকিবের আবেদনে ২০১৭ সালের ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। একইসঙ্গে রাকিবের ক্ষেত্রে মামলার কার্যক্রম কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। পরে রাকিবকে জামিন দেওয়া হয়।

রাকিবের আবেদন ছিল, যখন ঘটনার কথা বলা হয় তখন অর্থাৎ ২০০২ সালে তার বয়স ছিল ১০ বছর। সুতরাং তার বিচার হতে হলে শিশু আইনে হবে। বড়দের সঙ্গে দায়রা জজ আদালতে করা যাবে না। গতবছর ৮ অক্টোবর ওই রুল খারিজ করে রায় দেন আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন রাকিব। এ আবেদনে আপিল বিভাগ তিনমাসের মধ্যে নিম্ন আদালতে বিচার সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন।

এরপর বিচার শেষে সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গত ৪ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় সব আসামিকে সাজা দিয়ে রায় দেন। রায়ে হাবিবুল ইসলামকে কয়েকটি ধারায় ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তারসহ অন্য আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.